মোঃ এনামুল হক, মোংলা প্রতিনিধি: প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে মোংলা পোর্ট পৌরসভার নিবার্চন। আগামী ১৬ জানুয়ারীর নিবার্চনকে ঘিরে প্রাথর্ীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও। রবিবার সকালে বর্তমান মেয়র ও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রাথর্ী আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আলীকে পৌর শহরের তালুকদার আব্দুল খালেক সড়কে নিবার্চনী প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রাথর্ী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ: রহমান প্রচারণা চালিয়েছেন পৌর শহরের ছাড়াবাড়ী এলাকায়। এছাড়া কাউন্সিলর প্রাথর্ীরাও নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে পৌর শহর জুড়ে শোভা পাচ্ছে প্রাথর্ীদের পোস্টার। পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও সকল অলিগলি।
প্রচারণাকালে ধানের শীষের মেয়র প্রাথর্ী ও বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আলী বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর মেয়রের দায়িত্বপালনকালে পৌরবাসীকে সেবা করে আসছি। ১৬ জানুয়ারীর নিবার্চনকে ঘিরে প্রতিকুল পরিবেশের মধ্যদিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রথম দিকে একটু সমস্যা থাকলেও এখন বর্তমানে সুষ্ঠুভাবে প্রচার-প্রচারণা করছি। তবে দল মত নির্বিশেষে সাধারণ জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে এ ব্যাপারে নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন ভাল থাকে সংশ্লিষ্টদের কাছে সেই প্রত্যাশা করছি। যেহেতু আমি ১০ বছর সেবা দিয়েছে, শহরের উন্নয়ন করেছি, অন্ধকার থেকে আলোকিত করেছি এই পৌর শহরকে। যার ফলশ্রুতিতে ১৬ জানুয়ারী আমি জনগণের রায় পাবো ইনশাল্লাহ।
নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রাথর্ী শেখ আ: রহমান বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর মোংলা পোর্ট পৌরসভার নিবার্চন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়ে আমাকে পৌরবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন। মোংলার যত উন্নয়ন তা জননেত্রী শেখ হাসিনা, খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ও স্থানীয় সাংসদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রলায়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের মাধ্যমেই হয়েছে। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মোংলাবাসীর কাছে যাচ্ছি, তাদের কাছে ভোটের আহবাণ জানাচ্ছি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি, নৌকায় ভোট দিবে বলে তাদের কাছ থেকে সেই প্রতিশ্রুতিও পাচ্ছি। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি। আমি নিবার্চিত হলে জনগণ যে দুর্দশায় আছে তা ঘোচাতে চেষ্টা করবো। যেহেতু আমার সরকার ক্ষমতায় আছে, তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে এবং এই এলাকার অভিভাবক তালুকদার আব্দুল খালেক তার মাধ্যমে এই পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবো।
মোংলা পোর্ট পৌরসভা নিবার্চনে মেয়র পদে তিনজন, ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত তিনটি মহিলা ওয়ার্ডে ১২ জন প্রাথর্ী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ৯টি ওয়ার্ডের ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।
এবারই প্রথম ইভিএম পদ্ধতি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মোংলা পোর্ট পৌরসভার নিবার্চন। এবারের নিবার্চনে পৌরসভার সাধারণ ভোটারের সংখ্যা ৩১ হাজার ৫২৮জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৬৮১ আর নারী ভোটার ১৪ হাজার ৮৪০ জন। এর আগে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত নিবার্চনে এ পৌরসভায় ভোটারের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৯৫১জন।
এর আগে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হয় পৌর নিবার্চন। এরপর সীমানা জটিলতার মামলার কারণে নিধার্রিত সময়ে নিবার্চন না হওয়ায় জটিলতার নিরসন হওয়ায় দীর্ঘ ১০ বছর পর নিবার্চন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
নিবার্চনকে ঘিরে ইতিমধ্যে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া নিবার্চনের দিন দেয়া হবে আরো নয় জন ম্যাজিস্ট্রেট। নিবার্চনকে ঘিরে সকল প্রাথর্ীকে বিধি নিষেধ মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নিদের্শনা দিয়েছে উপজেলা নিবার্চন অফিসার।
উপজেলা নিবার্চন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকতার্ মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সকল প্রাথর্ীকে নিবার্চনী আচরণ বিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নিবার্চনী আচরণ বিধি লঙ্গন করলে কেউকেই কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবেনা। তিনি আরো বলেন, আচরণ বিধি লঙ্গনের দায়ে ইতিমধ্যে দুই কাউন্সিলর প্রাথর্ীর কমর্ীদেরকে নগদ জরিমানা করা হয়েছে। নিবার্চন সুষ্ঠু ও অবাধ করার লক্ষ্যে সকল ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।