মোংলায় ডোবায় পড়ে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে মায়ের সাথে নানা বাড়ী বেড়াতে এসে দিগন্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণধীন সেফটি ট্যাংকি নির্মাণের জন্য খনন করা ডোবা পড়ে মৃত্যু হয় ২১ মাস বয়সের এ শিশুটির।
নিহত শিশুর মামা মানিক খাঁন জানান, পৌর শহরের কবরস্থান এলাকায় বসবাস করেন তার বোন খাদিজা বেগম (৪০)। শনিবার সকাল ৯টার দিকে খাদিজা বেগম তার ছোট শিশু সন্তান ইয়ামিন হোসেন (২১ মাস) কে নিয়ে দিগন্ত কলোনী এলাকায় বাবার বাড়ীতে বেড়াতে আসেন। শিশু ইয়ামিন নানা বাড়ী আসার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলোনীর দিগন্ত প্রকল্প সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন সেফটি ট্যাংকির ডোবায় পড়ে যান। এরপর খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ডোবার মধ্যে শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখে আত্মীয়স্বজনেরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপতালে নেয়া হলে কর্তৃপক্ষ শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইয়ামিনের বাবা বাবুল হোসেন পেশায় একজন টমটম চালক। তার তিন ছেলের মধ্যে ইয়ামিন সবার ছোট।
নিহত শিশুর মামা মানিক বলেন, দিগন্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বিদ্যালয়ের সেফটি ট্যাংকি নির্মাণের জন্য দুই বছর আগে ৭/৮ ফুটের গভীরতার ডোবা করে রাখে। সেই ডোবায় পড়ে তার ভাগিনা মারা গেছে।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিএম আলআমিন বলেন, দিগন্ত স্কুলের তিনতলা বিশিষ্ট টয়লেট নির্মাণের কাজ করছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ। তারা দুইতলা পিলার ও ছাদ দিয়ে রেখেছেন এবং সেফটি ট্যাংকির জন্য বড় ডোবা করে ফেলে রাখেন। ঠিকাদারের গাফিলতিতে সেই ডোবায় পড়ে এই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সোহান আহমেদ বলেন, সংশ্লিষ্ঠ টিকাদারকে বার বার দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বলে হলেও তিনি তা করেননি। তাদের ওয়ার্ক অর্ডারের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। ওই ঠিকাদরের এখানে চরম গাফিলতি রয়েছে, তাদের বার বার বলার পরও তারা কথা শোনেনি। এই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে এনিয়ে আলোচনা করছি।
ঠিকাদার প্রতিনিধি তুহিন আহমেদ তাদের গাফিলতির কথা স্বীকার করে বলেন, এটা নিছক দুর্ঘটনা, তারপরও শিশুটির পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে আমাদের পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে মোংলা থানার ওসি (তদন্ত) বিকাশ চন্দ্র রায় ঘোষ বলেন, দিগন্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট নির্মাণের জন্য বড় ডোবা খুড়ে রাখেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এ ঘটনায় তদন্ত করে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট করার পর দাফনের জন্য তার পরিবারকে অনুমতি দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।