বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে হাজ্বী রাজাউল্লাহ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বানিজ্য বন্ধের দাবিতে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসি। এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য, নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। স্থানীয় অভিভাবকদের দাবী, অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হোক।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, জিউধরা ইউনিয়নের হাজ্বী রাজাউল্লাহ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার গত ১১ মে অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ঘরমুখো থাকার সুযোগে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তাদের পছন্দের ব্যাক্তিকে কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদশার এ বিদ্যালয়ে সভাপতিত্বের মেয়াদ আছে আগামি ১৪ জুন ২০২০ পর্যন্ত। প্রধান শিক্ষকের অবসরে যাওয়ার মেয়াদ চলতি মাসের ১৫ তারিখ। সে কারনে ওই দুজনে মিলে তাদের বিদায়ের পূর্বমুহুর্তে হারুন হাওলাদারের ছেলে শামীমকে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাগজপত্র তৈরী করছে।
প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি’র জোগসাজসে গোপনীয়ভাবে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে দেশের এ সংকটময় মুর্হুতে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার মধ্যেও পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যা স্থানীয়ভাবে দূর-দূরান্ত থেকে লকডাউনে আটকে থাকায় অনেকেই আবেদন করার সুযোগ পায়নি। সু-কৌশলে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ইউপি সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, একাধিক অভিভাবকরা।
স্থানীয় অভিভাবক ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার, আব্দুর রহমান খান, ইব্রাহিম শেখ, রেজাউল ইসলামসহ একাধিক অভিভাবকরা ক্ষোভের সাথে বলেন, ইতোপূর্বে এ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ানসহ ৫টি পদে লাখ লাখ টাকা হাত বদল করে অযোগ্য ব্যক্তিদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে টাকাগুলো নেওয়া হলেও কোন উন্নয়ন হয়নি। ব্যাক্তির ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে এ নিয়োগগুলো থেকে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য’র বরাবরে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারকে জোর সুপারিশ করছেন সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন।
এ সর্ম্পকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত করে সত্ত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, ইতোপূর্বে যেসব নিয়োগ হয়েছে তা মেধাতালিকার ভিত্তিতেই হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে নয়। তদরুপ এবারেও অফিস সহকারি পদে নিয়ম অনুযায়ী মেধাতালিকার ভিত্তিতে প্রার্থী নিয়োগ পাবেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম খান বলেন, একটি মহল অনৈতিক প্রকৃয়ায় সুবিধা গ্রহনে ব্যার্থ হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে মনগড়া অভিযোগ দিয়েছে। পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরেও করোনার কারনে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রচারের জন্য এ নিয়োগের বিষয়ে মাইকিংও করা হয়েছে। স্বচ্ছতার সাথেই সবকিছু করা হচ্ছে।