মঙ্গলবার সকাল ১১টায় গল্লামারী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার ও প্রশিক্ষণ সেন্টারে এক দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মশালায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ফিস ফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোল্লা সামছুর রহমান শাহীন, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিচালক স্হানীয় সরকার খুলনা বিভাগের মোঃ ফজলুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ এম আর টি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড, মুহাম্মদ আব্দুর রউফ, প্রধান আলোচক খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মৎস্যবীদ জয়দেব পাল, ও মেরিন ফিশারিজের উপ-পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রী, অনুষ্ঠান সার্বিক সঞ্চালন করেন মোঃ মনিরুজ্জামান।
অর্থায়নে : ফিশারী প্রোডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এফপি-বিপিসি), বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ফিস ফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ফোয়াব)। বাস্তবায়নে : ফিস ফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফোয়াব)। সহযোগিতায়: মৎস্য অধিদপ্তর, খুলনা, আস্থা ফিড ইন্ডাঃ লিঃ মা। (কারিগরী) সহযোগিতায়: টেক-অ্যানালাইটিকা লিমিটেড সমন্বিত চিংড়ি ও মৎস্য চাষ, মৎস্য পোনা ব্যবসার সাথে জড়িত সদস্যদের মধ্যে লাভজনক মানদন্ড অনুশীলনের মাধ্যমে সুসংগঠিত ও দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করত: নিরাপদ মৎস্য উৎপাদনে বিশ্বের মডেল হওয়া।
মৎস্য ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ফরিয়া, ডিপো, পাইকার, এজেন্টদের বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় উন্নয়ন সাধনে সহায়তা করা। মৎস্য সেক্টরে অধিক সংখ্যক যুবক ও নারীদের টেকসই স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। নিরাপদ অল্প জায়গায় অধিক মৎস্য উৎপাদন ও জলাশয়ের মৎস্য চাষের আওতায় আনার লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নেওয়া। অর্থলগ্নীকারী, উদ্যোক্তা, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে সংগঠিত করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুশীলন করার মাধ্যমে মৎস্য শিল্পকে বর্ধিত বাণিজ্যিক উৎপাদনের এবং বিশ্বের যেকোন শিল্প মানের সাথে তুলনা করার লক্ষ্যে কার্যাদি বাস্তবায়ন করা। জাতীয় মৎস্য চাষ, জাতীয় চিংড়ি চাষ, জলমহল ও চিংড়িমহল নীতিমালা, সরকারের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে খামারীদের স্বার্থ নীতিমালায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
মৎস্য সম্পদের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করা।
-OAB-কর্তৃক গৃহিত পদক্ষেপসমূহঃ মৎস্য ও চিংড়ি চাষের গুনগত মানোন্নয়নে খামারীদের সচেতনতা উন্নয়নে চাষী সমাবেশ। হ্যাঁসাপ ও ট্রেসোবিলিটি বাস্তবায়ন, সমাজ ভিত্তিক মৎস্য প্রকল্প প্রনয়ণ করা। বাগদা ও গলদা চিংড়ি, কাঁকড়া, কুঁচিয়া প্রদশর্নী খামার।
চিংড়িতে পুশ বিরোধী সচেতনতা উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান।
এ চিংড়ি চাষিদের মানসম্পন্ন ও পিসিআর/এসপিএফ পরীক্ষিত পোনা জনপ্রিয় করতে সমাবেশ।চিংড়ি চাষের মাঠ পর্যায়ে লোনা পানির চাষ বিষয়ক দ্বন্ধ নিরসন প্রতিকার বিধাতে সহায়তা ফিস ফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ফোয়াব) একটি বেসরকারী বাণিজ্যিক কৃষক সংগঠন, যাদের রয়েছে মৎস্য ও চিংড়ি চাষের বাস্তব অভিজ্ঞতা। প্রশিক্ষিত চাষীদের মধ্যে আছে সাধারন ব্যবসায়ী, যুব ও মহিলা উদ্যোক্তা, দিন দিন এর সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফোয়াব এসোসিয়েশন এর উদ্দেশ্য হলো দেশের সব ধরনের মৎস্য চিংড়ি মৎস্য পোনা উৎপাদনকারি ও মৎস্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত যে কোন প্রতিষ্ঠান মালিকদের অধিকার রক্ষা, মৎস্য ও চিংড়ী চাষকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও মৎস্য চাষীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার জন্য দারিদ্র দূর করতে মৎস্য-চিংড়ী ও মানসম্মত মৎস্য পোনা উৎপাদনে উৎসাহিত করা, মৎস্য চাষের সঙ্গে জড়িতদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, মালিকদের অধিকারের পাশাপাশি মৎস্য চাষের জন্য সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচীতে সহায়তা করা। মৎস্য খাতের ব্যবসায়ীগনের বাণিজ্যিক স্বার্থ সম্পর্কে সরকারী আদেশ মোতাবেক স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যবস্থা গ্রহণ, সর্তক দৃষ্টি রাখা ও সামগ্রিক ব্যবসায়ীক উন্নতি সাধনের কার্যক্রম গ্রহণ করা।
ফিস ফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ফোয়াব), ফিসারী প্রডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এফপি-বিপিসি), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং এগ্রিকালচার শিল্প দক্ষতা
পরিষদ (এআইএসসি) এর সদস্যভুক্ত জাতীয় পর্যায়ের একটি প্রতিষ্ঠান।
উল্লেখ্য বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য সেক্টরের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রতিদিনে খাদ্যে প্রাপ্ত প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ ভাগ যোগান দেয় মাছ। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা২০১৭- এর তথ্যমতে এদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি'র ৩.৬১ শতাংশ এবং কৃষিজ আয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ (২৬.৫০ শতাংশ) মৎস্য খাত হতে আসে। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১১ শতাংশের অধিক বা ২ কোটি লোক এই সেক্টরের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়োজিত।
উপকুলীয় এলাকার জল-মাটি আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সম্পদ, চিংড়ি, কাঁকড়া, কুঁচিয়া চাষের অনুকুলে বিদ্যমান বলেই চাষীরা তাদের জমিতে চিংড়ি, কাঁকড়া চাষ করে থাকে। মৎস্য উৎপাদনকে ঘিরে বিভিন্ন শিল্প গড়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে রুই জাতীয় মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কৈ, শিং, মাগুর, পাবদা, মলা, পাংগাস, তেলাপিয়া উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক নিরব বিপ্লব স্বাধিত হয়েছে। কুঁচিয়া, কোঁড়াল, ফাঁইসা, টেংরা
চাষে সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এখনো এর পক্ষে-বিপক্ষে কিছু রয়ে যায় যা অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে এবং প্রত্যেক বছরে রপ্তানীকে সীমিত করে। বাংলাদেশে মৎস্য খাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মানসম্মত উপকরণ,ভাইরাস সমস্যা, নিম্ন মানের খাবার, পানি ব্যবস্থাপনা এবং জৈব নিরাপত্তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
অন্যান্য চ্যালেঞ্জ যেমন মৎস্য উৎপাদক এবং রপ্তানীকারকের মাঝে স্বল্প যোগাযোগ এবং এ সংক্রান্ত শিক্ষা ও উৎপাদকের মাঝে আরো কম যোগাযোগ বাংলাদেশের মৎস্য খাতের টেকসই উন্নয়নে ২০৪১ রূপকল্প কার্যক্রম সম্পাদনে প্রভাব ফেলবে। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে দেশের মৎস্য শিল্পকে আমদানীকারকদেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সদা তৎপর থাকতে হচ্ছে।