সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বৃহস্পতিবার , ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
যুদ্ধকালীন সময়ের ডাকাত দেলোয়ার এখন ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা! | চ্যানেল খুলনা

প্রশাসনের তদন্তে প্রমাণিত হলেও নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা

যুদ্ধকালীন সময়ের ডাকাত দেলোয়ার এখন ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা!

মোঃ এনামুল হক, মোংলা প্রতিনিধি :: যুদ্ধকালীন সময়ে বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে মোংলার বুড়িরডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মোঃ দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। তবে তিনি এখন ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। স্থানীয় প্রশাসনের তদন্তে ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার সত্যতাও মিলেছে। এরপরও তিনি পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা। মুক্তিযোদ্ধার কোটায় এক সন্তানকে পুলিশে চাকুরীও দিয়েছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের কয়েক যুগ অতিবাহিত হলেও মুক্তিযোদ্ধা সেজে থাকা ডাকাত দেলোয়ারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় চরম ক্ষুদ্ধ বাগেরহাট জেলার মুক্তিযোদ্ধারা।
মোংলার বুড়িরডাঙ্গার বাসিন্দা সুদীপ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর গত বছরের ৩০ অক্টোবর প্রেরিত একটি অভিযোগে জানা যায়, যুদ্ধকালীন সময়ে সুন্দরবনে অবস্থান করে বাগেরহাটের রাধাবল্লবসহ আশপাশের এলাকার ডাকাতি করতেন মোংলায় মুক্তিযোদ্ধা সেজে থাকা মো: দেলোয়ার হোসেন। লিখিত ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’র কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল’র প্রকাশিত মুক্তিভাতা তালিকায় বাগেরহাট জেলায় কোথায়ও দেলোয়ার হোসেনের নাম অন্র্Íভুক্ত নাই। অথচ নিজ জন্মস্থান গোপন করে ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে নানা কুট কৌশলে মোংলায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্র্Íভুক্ত করেন দেলোয়ার হোসেন। এরপর অর্থ ও কায়িক শক্তি ব্যবহার করে দালাল চক্রের মাধ্যমে বেআইনীভাবে মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে তার নাম অন্র্Íভুক্ত করান। যার গেজেট নম্বর ২৭৮৪।
এরপর ওই লিখিত অভিযোগের তদন্ত করে জানানোর জন্য বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করা হয়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মোংলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার রাজবংশী বিষয়টি তদন্ত করেন। এরপর তিনি ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি শুনানী করেন। শুনানীকালে ৩২ জন স্বাক্ষী ও ৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং স্থানীয় শতাধিত ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত ও শুনানী শেষে চলতি বছরের ১১ মার্চ জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন পাঠান সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার রাজবংশী। জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরিত তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নিখিল চন্দ্র রায় ও বাগেরহাট জেলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমানসহ উপস্থিত সকল মুক্তিযোদ্ধারা দেলোয়ার হোসেনকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অস্বীকার করেন।
মুুক্তিযোদ্ধা সেজে সরকারী সুযোগ সুবিধা আদায় আর সন্তানকে পুলিশে চাকুরী দেয়ার বিষয়ে দেলোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাগেরহাটের রাধাবল্লব এলাকার বাসিন্দা তিনি। ১৯৭১ সালে ভারতে ট্রেনিং নিয়ে নিজ এলাকায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন অন্য সবার সাথে এক হয়ে। মুক্তিযোদ্ধার কোটায় এক সন্তানকে পুলিশে চাকুরী দেয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেন তিনি।
তবে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার রাধাবল্লব এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের গ্রুপ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জিতেন্দ্রনাথ পাল জানান, ১৯৭১ সালে ৭ মার্চের পরে ভারত থেকে  ট্রেনিং নিয়ে এসে তিনিসহ ৬৫ জন কচুয়া এলাকায় যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।  যুদ্ধ চলাকালীন কোন সময় দেলোয়ার হোসেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। জিতেন্দ্রনাথ দাবী করেন, যুদ্ধকালীন সময়ে দেলোয়ার হোসেন সুন্দরবনের ডাকাত সর্দার নুর ইসলামের সাথে বনে ডাকাতির সাথে জড়িত ছিলেন।  জেলায় বিভিন্ন এলাকায় মানুষের বাড়ী ঘরে হামলা আর লুটপাট করেছেন তিনি। দেশ স্বাধীনের পর ডাকাত সর্দার নুর ইসলামের মূত্যুর পর দেলোয়ার তার (নুর ইসলামের) স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এবং নানা বির্তকিত কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় দেলোয়ার কখনো তার জন্মস্থান কচুয়া উপজেলায় আসতে পারেনি। মোংলাতে স্থায়ী বসবাস করতে থাকেন। এরপর সে ভূয়া কাগজপত্র বানিয়ে কোন এক সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সেজে গেছেন। এক সন্তানকে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় পুলিশে চাকুরী দিয়েছেন। দীর্ঘদিন প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সেজে থাকা দেলোয়ার হোসেনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ না দেয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জিতেন্দ্রনাথ পাল।
এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নিয়মনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তদারকি করবেন তিনি।
এদিকে অভিযোগকারী সুদীপ সরকার বলেন, ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার পর থেকে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন দেলোয়ার ও তার সহযোগীরা। একই সাথে ঢাকায় একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় তার এক আত্মীয় কাজ করেন, তাকে দিয়েই বাগেরহাট জেলা প্রশাসককে ম্যানেজ করেছেন আর ওইসব অভিযোগ গায়েব করার কথা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন দেলোয়ার।

https://channelkhulna.tv/

বাগেরহাট আরও সংবাদ

চিতলমারীতে আট দলীয় ফুটবল টুর্ণামেন্টে শেরে বাংলা কলেজ ছাত্রদল চ্যাম্পিয়ন

রামপালে যাত্রাপালা ও জুয়ার আসর বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

রামপালে চারদিন ধরে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার

রামপালে শীতার্তদের হাতে উপহারের কম্বল তুলে দিলেন কৃষিবিদ শামীম

রামপালে জাতীয় সমাজসেবা দিবস পালিত

রামপালে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।