গণমাধ্যম সত্য প্রকাশ করলে তা সরকারের জন্য ভালো মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আল জাজিরার প্রতিবেদনে সত্য তথ্য থাকলে সরকার সেটা খতিয়ে দেখত। সোমবার (১ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে দেশটির রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো মহল থেকে আল জাজিরা ইস্যু এসেছে কিনা-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান ও সিনেটরদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপ হয়েছে। তবে কেউই আল জাজিরার প্রতিবেদনের কোনো কথা ওঠাননি। এগুলো বাঙালির মাথাব্যাথার কারণ।’
এটা নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকা, আমেরিকার সময়, আমেরিকা প্রতিদিন, আমেরিকার বাংলাটিভিসহ আরও দুই একটা টিভি প্রশ্ন করেছে। অন্য কেউ প্রশ্ন তোলেনি। আমি বলেছি, এটা সুন্দর নাটক, কিন্তু নাটকটা বেমানান হয়েছে।
আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সম্প্রতি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে ছয়দিনের ওয়াশিংটন সফর করে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সফরে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য, রোহিঙ্গা ইস্যু, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরকে দেশে ফেরত আনা, জলবায়ু পরিবর্তন, বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ, করোনা পরিস্থিতি, মানবাধিকার ও অভিবাসী ইস্যুসহ নানা বিষয়ে দেশটির গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন।
সফর প্রসঙ্গে মোমেন জানান, সফরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (সেক্রেটারি অব স্টেট) অ্যান্টনি ব্লিনকেন, জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস, জন কেরি, কংগ্রেসম্যান গ্রেইস মেংসহ অনেক সিনেটরের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।
মোমেন বলেন, ‘নতুন প্রশাসন বাংলাদেশের বিষয়ে খুশি। গনতান্ত্রিক ধারায় ক্ষমতার পালাবদলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছি। আমরা এখানে তাদের আরও বিনিয়োগ চেয়েছি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে স্পেশাল দূত নিয়োগ করতে বলেছি, তবে তারা দেশটিতে সামরিক সরকারের পরিবর্তে গণতান্ত্রিক সরকার ফিরে আসা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়েছি। তারা এ অঞ্চলে নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছে; আমরা বলেছি, আমরা উন্নয়নের দিকে বেশি আগ্রহী।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সফরে জলবায়ু ইস্যুতে জন কেরির সঙ্গে আলাপ হয়েছে। অভিযোজনের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ক্লাইমেট ফান্ড তৈরির বিষয়ে একমত হয়েছে দেশটি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে আলাপ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রবাসী অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধ করে ওর্য়াকপারমিট দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোরর বিষয়ে কথা হয়েছে।’
জাতিসংঘের মহাসচিরের সঙ্গে ভার্চুয়াল আলাপ হয় মোমেনের। সেই আলাপে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশিদের বড় পদে আনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘আমি মহাসচিবকে বলেছি, শান্তি মিশনে আমরা এক নম্বরে; কিন্তু আমাদের একটা লোকও নাই বড় পদে। আমি ওনাকে বলেছি, এটা ইনজাস্টিস। তিনি বলেছেন, এটা দেখবেন।’
চলতি মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জন্মশতবার্ষিকীতে ওয়াশিংটন সরকারের কোনো প্রতিনিধি আসবে কিনা- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দাওয়াতও দিয়েছি।’