আন্তর্জাতিক ডেস্কঃসৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের সু-সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এবার ভারতের সঙ্গেও সৌদির একই রকম সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে। পরস্পর বিরোধী দুটি দেশের সঙ্গেই কীভাবে সম্পর্ক রক্ষা করছে সৌদি আর কীভাবে রিয়াদের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ভারত তা নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে অনেকের মধ্যে।ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুই দিনের সফরে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর সফরের সময়ে নয়াদিল্লি-রিয়াদের মধ্যে অন্তত ১২টি চুক্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌদি সরকার তাদের ভিশন-২০৩০ কর্মসূচিতে বিশ্বের ৮টি দেশের সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এই ৮টি দেশের মধ্যে অন্যতম একটি হলো ভারত। ভারতকে সৌদি আরব এই তালিকায় রাখায় সৌদি-পাকিস্তান সম্পর্কে ভাটা পড়ছে না?এ সম্পর্কে রিয়াদে প্রায় দশ বছর ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসা তালমিজ আহমেদ বিবিসিকে বলেন, আসলে ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই এই সম্পর্কে একটা নাটকীয় মোড় এসেছে। কাশ্মীর ইস্যুর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্কও নেই।
তিনি আরও বলেন, সৌদির শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছে, পাকিস্তান থেকে উগ্রপন্থা বা জিহাদের উৎপত্তির একটা বিরাট ঝুঁকি আছে, যা সীমান্ত মানে না। ভারতের পাশাপাশি সৌদি আরবও এতে আক্রান্ত হতে পারেসাবেক এই কূটনীতিবিদ অবশ্য এটাও স্বীকার করেন যে, অনেক আগে থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গেও সৌদির নিবিড় সম্পর্ক আছে। কিন্তু তার মতে ভারত-সৌদি সম্পর্কের সঙ্গে এর কোনো বিরোধ নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রিয়াদ-নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতা মূলত ব্যবসায়িক কারণেই গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে আছে তেল ব্যবসা। ভারত দীর্ঘদিন ধরে তেলের জন্য সৌদি আরবের ওপর নির্ভর করছে। নয়াদিল্লি যে অপরিশোধিত তেল আমদানি করে তার প্রায় ২০ শতাংশ আসে সৌদি থেকে।
এছাড়া ভারতীয়দের জন্য সৌদি আরব বিশাল একটি শ্রমবাজার। সেখানে বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ ভারতীয় কাজ করছে। তারা প্রতি বছর দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। অন্যদিকে কাশ্মীরে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আপেলের বড় একটি বাজার সৌদি। এসব কিছু মিলিয়ে সৌদি আরব ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে।