বিএইচ সজল :: আজগর মল্লিক। পেশায় রাজমিস্ত্রি। গতবছর খুলনার রায়েরমহল থেকে পরিবার নিয়ে পাড়ি জমান বটিয়াঘাটার রাজবাঁধ এলাকায়। পরিবারের জন্য ঘর বাঁধেন আলাইপুর খালের গা ঘেঁষে। বাড়িটির দু’পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খাল। কর্মস্থল হোক বা প্রতিবেশীর বাড়িতেই হোক কোথাও যেতে হলে পারি দিতে হয় খালটি। তাই পরিবারের জন্য নিজ চিন্তা-ভাবনা থেকে তৈরি করেছেন ভাসমান যাতায়াত ব্যবস্থা। স্থানীয় ভাষায় এটির নাম ভিয়া বা পল্টন। চারটি ড্রাম ও কাঠ দিয়ে তৈরি ভিয়াটি বানাতে খরচ হয়েছে সাড়ে সাত হাজার টাকা। খালের দু’পাশে দুটি বাঁশের সাথে লোহার ছোট্ট চাকা লাগিয়ে দড়ির সাহায্যে ভিয়াটি এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নেয়া হয়। তার দেখাদেখি আশে পাশে অনেকেই তৈরি করেছে এটি।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের পার্শ্ববর্তী এলাকা রাজবাঁধ। বয়রা-রায়েরমহল বাইপাস সড়ক ধরে মোস্তফার মোড় থেকে কৈয়া বাজারের দিকে তিন-চার কিলোমিটার গেলে রাজবাঁধ এলাকার শুরু। সিটি’র মধ্যে জমির দামের তুলনায় এখানে কম হওয়ায়, নতুন জনবসতির তৈরি হয়েছে এখানে। ইটের সোলিং এর রাস্তার এক পাশে খাল অপর পাশে বসতি তৈরি হয়েছে। অনেকেই খালের ওপারে বাড়ি করেছেন। আর খাল পার হতে বাঁশের সাঁকো বা নৌকা ব্যবহার করছে অনেকেই।
এ প্রতিবেদককে আজগর মল্লিক বলেন, এখানে জমির দাম কম হওয়ায় গতবছর পরিবার নিয়ে এখানে এসেছি। তখন এখানে এত বাড়ি ঘর ছিলো না। খালটি পারাপারের জন্য আগে একটি সাঁকো বানিয়ে ছিলাম তা কিছু দিন পর ভেঙে যায়। তারপর মনে হলো ড্রামতো ভাসে তাই সেই চিন্তা ভাবনা থেকে এটি বানিয়ে ফেললাম। এটি ব্যবহার খুব সহজ। পরিবারের নারী ও শিশুরা একাএকা পার হতে পারে। তবে শিশুদের নিয়ে একটু ভয় হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর রানা বলেন, আজগর মল্লিকের তৈরি ভিয়াটি এলাকায় নতুন। এই এলাকাটিতে নতুন জনবসতি হয়েছে। এখনো রাস্তাঘাট কালভাট ঠিকমত তৈরি হয়নি। খাল পারাপারের জন্য এখানে বাঁশের সাঁকো ও নৌকা ব্যবহার করা হয়। তবে সবাই তো নৌকা চালাতে পারে না। আর সাঁকো তৈরিতে খরচও বেশি হয়। আজগর মল্লিকের ভিয়াটি খুবই চমৎকার হয়েছে। এটি ব্যবহার করে যে কেউ সহজে পার হতে পারে।