শেখ মোঃ নাজমুল হুদা, রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্লকের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের মারধর ও জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আনসার কমান্ডার মোঃ লিয়াকত হোসেনের বিরুদ্ধে। শ্রমিক ও ঠিকাদারদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহনেরও অভিযোগ রয়েছে এই আনসার কমান্ডারের বিরুদ্ধে।
মুঠোফোনে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে জানতে চাইলে আনসার কমান্ডার লিয়াকত হোসেন নিজেকে নির্দোষ বলে দ্রুত ফোনটি কেটে দিন।
এসব বিষয় ক্ষতিয়ে দেখে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম।
মারধরের শিকার ইব্রাহীম মোড়ল, তরিকুল ইসলাম, মাসুদ সরদার, বাবুল শেখসহ কয়েক জন জানান, “এন ইসলাম” কনস্ট্রাকশনের অধীনে করোনার আগে থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্লকের কাজ করে আসছিলাম। এর মধ্যে সপ্তাহ খানেক আগে আমাদের অনেক শ্রমিকদের মারধর করে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। তাকে টাকা না দিলে কোনভাবে কাজ করতে পারবেন না। কোন এমপি মন্ত্রীও আমার কিছু করতে পারবে না বলে হুমকী দেয় আনসর কমান্ডার লিয়াকত হোসেন। এছাড়া আমাদের জিম্মি করে একটি ছাগল ও কয়েকবার টাকাও নিয়েছে আনসার কমান্ডার লিয়াকত। এর পরেও নিয়মিত তাকে উৎকোচ না দেওয়ায় সে আমাদের শ্রমিকদের মারধর করে বের করে দেয়।
“এন ইসলাম” কনস্ট্রাকশনের স্বত্তাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ব্লক উঠানো একটি কাজ সাফ কন্টাকে নিয়ে আমি কাজ করাচ্ছিলাম। ৮৫ জন শ্রমিক আমার কাজ করত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে আমার শ্রমিক, ম্যানেজার ও সুপার ভাইজারকে বিভিন্নভাবে উৎকোচ পাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার ম্যানেজারের কাছ থেকে ছাগল নেওয়াসহ কয়েকবার নগদ অর্থ নিয়েছেন উৎকোচ হিসেবে। শেষ পর্যন্ত আমার শ্রমিক, ম্যানেজার ও সুপার ভাইজারকে মারধর করে বের করে দিয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় কিছু লেবার সরদারের সাথে লিয়াজু করে নিজে সাফ কন্টাকে কাজ করানোর চেষ্টা করছেন আনসার কমান্ডার লিয়াকত। এই অবস্থায় লিয়াকতের জন্য আমি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। এই বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে লিয়াকতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন ও শ্রমিকরা যাতে সুষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের কাছে সেই দাবি করেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আনসার কমান্ডারের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে আমার জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, সত্যতা পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।
আনসার ও ভিডিপির বাগেরহাট জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ নাহিদ হাসান জনি বলেন, আনসার কমান্ডারের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। সত্যতা পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।