চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় এবার চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। সরিষা চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় এবার চলতি রবি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবারে চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জিত জমির পরিমাণ ৪ হাজার ২৫০ হেক্টর। উপজেলায় টরি-৭, বারি-৯, বারি-১৪, ১৫ জাতের সরিষার চাষ করা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে শুধুই যেন হলুদের সমারোহ সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে চরমধূয়ার দিগন্ত জোড়া মাঠ। ক্ষেতে গুন গুন করছে মৌমাছি। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌমাছির ঝাঁক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলাকার কৃষকরা।
চরমধূয়া ইউনিয়নের কৃষক নাজিমুদ্দিন বুলবুল বলেন, স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে অধিক মুনাফা থাকায় কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জমিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদ করেছি। তিনি বলেন, ধানের দামের দরপতনের কারণে প্রতি বছরই তাদের লোকসান গুণতে হয়। তাই বিকল্প ফসল হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি তিনি সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
একই ইউনিয়নের মোস্তফা মিয়া বলেন, চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। সরিষা তুলে নিয়ে ওই জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগাব। সরিষার ফসল থেকে উপার্জিত আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়ক হবে বলে দাবি করেন তিনি।
চরমধূয়া ইউনিয়নের অছেদ শিকদার বলেন, আগাম জাতের সরিষার আয় করা অর্থ দিয়ে বোরো ধানের খরচ চালানো সহজ হবে। এছাড়াও সরিষা চাষে সার কম প্রয়োগ করতে হয়। সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানি লাগে না। একেবারই খরচ কম ও অল্প সময়ে এ ফসল ঘরে তোলা যায়। বর্তমান বাজারে দামও ভাল।
রায়পুরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরিষার রোগ বালাই দমনে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুর রশীদ জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এখানে কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা সরিষা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি। আবাদে মনোযোগ দিয়েছে নদী বেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল এলাকার কৃষকরা। কৃষকরা ভাল ফলন পাওয়ার আশা করছেন।