চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃগত ৪-৫ দিন থেকে শৈত্যপ্রবাহ ও তীব্র ঠান্ডায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। এছাড়া ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরাও। খুলনা শিশু হাসপাতাল ছাড়াও ১০ জেলায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ঠান্ডাজনিত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
জানা যায়, গত ৪ দিন ধরে হঠাৎ শৈত্যপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অধিকাংশ শিশুরা নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। রোগীদের চাপে হাসপাতালে বেড সংকট দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে অনেক রোগী মেঝেতেও শুয়ে-বসে আছে। এসব শিশু রোগীরা জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া অনেক শিশু রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন অভিভাবকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শিশু হাসপাতালে বর্তমানে ৩৮টি কেবিন এবং অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা বিভাগ ও ওয়ার্ড নিয়ে মোট ২৭০টি বেড রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ শতাধিক শিশু রোগী এখানে চিকিৎসাধীন থাকে। তবে গত ৩-৪ দিন ধরে রোগীর চাপ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যার অধিকাংশ নিউমোনিয়ায় ও ঠান্ডাজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
খুলনা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা যশোরের চৌগাছা উপজেলার পবিত্র বিশ্বাসের স্ত্রী নিপা বিশ্বাস জানান, ঠান্ডাজনিত রোগে ৭ দিন বয়সী নবজাতককে নিয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছি। তবে আগের থেকে কিছুটা সুস্থ আছে শিশুটি।
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আসমা বেগম বলেন, ‘শিশু সন্তানকে নিয়ে প্রথমে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছি। সেখানে শিশুটির অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করি।’
হাসপাতালে দায়িত্বরত নার্স লাকী আকতার দৈনিক অধিকারকে বলেন, হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের জন্য বেড সংকট দেখা দিয়েছে।
খুলনা শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মাজারুল ইসলাম বলেন, মায়েদের অসচেতনতার কারণেও শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগে ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কম বয়সী মায়েদের গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তানের ওজনও কম হচ্ছে। এছাড়া গত কয়েকদিনে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। শিশুদের ঠান্ডা যাতে না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এ বিষয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. কামরুজ্জামান জানান, বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর চাপ কিছুটা বেশি। কেবিন বা বেড খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবার পূরণ হয়ে যায়। ফলে সামাল দিতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও সকল রোগীকেই সবধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।