বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের শরণখোলা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে এক গার্মেন্টস কর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের কয়েক দফা নির্যাতনের ফলে গার্মেন্টস কর্মী স্বপন আহমেদ (৩৫) গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়েলে একই দিন দুপুরে তাকে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষনিক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে
ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসীর সূত্র জানায়, ২নং খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মধ্য-খোন্তাকাটা গ্রামের বাসিন্দা মৃতঃ নাদের হাওলাদরের ছেলে গার্মেন্টস কর্মী স্বপন ও তার ভাই মোঃ ফুল মিয়া হাওলাদারের সাথে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে মাস খানেক পুর্বে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্বপনের বোন রাহিমা আক্তার তানিয়া বাদী হয়ে স্বপনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় স্বপনকে গ্রেফতারের জন্য (বুধবার) সকালে সাদা পোশাকে শরণখোলা থানা পুলিশের ৩ সদস্যের একটি দল তার বাড়িতে প্রবেশ করে স্বপনের নাম ধরে ডাক দেয়। এ সময় তার স্ত্রী শারমিন (২২) ঘরের দরজা খুলতেই পুলিশ সদস্যরা ঘুমন্ত স্বপনকে বিছানা থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে মারধর শুরু করেন। ওই সময় তার স্ত্রী সহ বড় ভাই আঃ হালিমের স্ত্রী রঞ্জিনা বেগম(৩৬) এবং স্থানীয়রা অনুনয় বিনয় করেন কিন্তু মন গলেনি ওই পুলিশ সদস্যদেও ।
স্বপনের বড় ভাইয়ের স্ত্রী রঞ্জিনা বেগম এবং স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ মুক্তা সহ কয়েক জন বলেন, পুলিশ সদস্যরা স্বপনকে ঘর থেকে মারতে মারতে রাস্তায় নিয়ে যায় এবং বলে পুলিশ কি জিনিস তোকে এবার ভাল করে বোঝাব । এর পর রাস্তায় ফেলে স্বপনকে উপর্যপুরী মারপিট করতে থাকে পুলিশ । এসময় স্বপনের স্ত্রী তার স্বামীকে বাচাঁতে পুলিশের হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেন। স্থানীয় অনেকে ঘটনাটি দাড়িয়ে দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি । তবে, ঘটনার সময় মামলার বাদী রাহিমা হাজির থেকে উল্টো পুলিশকে ইন্ধন যোগাচ্ছিল।
এ বিষয়ে রাহিমা বেগম বলেন, আমি স্বপনের বিরুদ্ধে মারপিটের মামলা করি। শুনেছি এ ঘটনায় তাকে (বুধবার) সকালে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেছে। তবে মারধর করেছে কিনা তা আমি জানিনা।
এ বিষয়ে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, থানা থেকে আজ দুপুরে স্বপন নামের এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই রোগীর হার্ট ব্লক হয়ে যাওয়ার কারনে তাকে তাৎক্ষনিক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে, শরণখোলা থানার এস.আই বিশ^জিত কুমার ঘোষ বলেন, স্বপনকে আটকের পর তিনি গাড়ীতে উঠতে চাননি। তাই ২/১ চড় থাপ্পড় দেয়া হয়েছে। তবে, তাকে কোন ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।
এছাড়া শরণখোলা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস.কে আব্দুল্লাহ আল সাঈদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ইতিমধ্যে ওই পুলিশ সদস্যদের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে। তবে, স্বপনের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে ওই পুলিশ সদস্যদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।