শরণখোলা প্রতিনিধি :: বিয়ের নামে বানিজ্যে করার অভিযোগে চাকুরীচুত বিডিআর সদস্য মো. মারুফ শেখ (৪০) নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে শরনখোলা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাতে পুলিশের একটি চৌকশ দল খুলনার দামুদার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারককে আটক করে।
পুলিশ জানায়, খুলনার শ্রী-ঘাট এলাকার বাসিন্দা মৃ. রমজান আলী শেখের ছেলে মো. মারুফ শেখ, বাংলাদেশ বিড়িআরের ১৬ রাইফেল ব্যাটারলিয়ানের সিপাহী পদে ১৯৯৬ সালে রংপুরে যোগদান করেন
পরে ২০০৪ সালে তিনি খুলনার ফুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আ. ছালাম সর্দারের মেয়ে নুপুর আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের বছর দুই পর নুপুরের সাথে মারুফের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তাছাড়া অনৈতিক কর্মকান্ডের দায়ে ২০১৪ সালে বিড়িআর হতে চাকুরীচুত হয় সিপাহী মারুফ।
ওই ঘটনার পর থেকে তিনি নিজেকে সেনাবাহীনির মেজর, র্যাব ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে নানা ভাবে প্রতারনার জাল বুনতে শুরু করেন।
যার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে মারুফ সুন্দরবন সংলগ্ন শরনখোলা উপজেলার তাফালবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. সোবাহান মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তারকে বিয়ে করেন।
২০১৯ সালে একই ইউনিয়নের সোনাতলার গ্রামের বাসিন্দা মো. মনা মল্লিকের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার, ২০২০ সালে শরনখোলা গ্রামের বাসিন্দা মো. কবির হাওলাদারের মেয়ে কারিমা আক্তার, উত্তর তাফালবাড়ী এলাকার বাসিন্দা আ.বারেক ব্যাপারীর কন্যা মারুফা আক্তার এবং সর্বশেষ তাফালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. সুলতান জোমাদ্দারের মেয়ে জেসমিন আকতার (২৬)কে জাকারিয়া নাম ব্যাবহার করে বিয়ে করেন তিনি।
প্রতারক মারুফ তার আসল নাম ঠিকানা ও পিতৃ-পরিচয় গোপন রেখে বিয়ে করে প্রত্যেক শশুরালয় থেকে নানা কৌশলে ৫ থেকে ১৪ লাখ টাকা সহ অনেক স্বর্নলংকার হাতিয়ে নিয়েছে।
এসব বিয়ের পরে সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দেয় মারুফ শেখ।
তবে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে স্ত্রী-জেসমিনকে কিছু না বলে শরখোলা থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যান মারুফ এবং বন্ধ করে দেন সকল যোগাযোগ।
এ ঘটনায় জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে ধর্ষন ও প্রতারনার অভিযোগ তুলে স্বামীকে আসামী অন্তরভুক্ত করে চলতি বছরের ১৫ জুন শরনখোলা থানায় নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা অনুসন্ধান করতে গিয়ে মারুফের বিয়ে বানিজ্যের বিষয়টি জানতে পারেন পুলিশ।
এ বিষয়ে শরনখোলা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, জেসমিনের দায়ের করা মামলা অনুসারে মারুফের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে তিনি চারটি বিয়ের কথা স্বীকার করেছে।
মোরেলগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোনিয়া পারভিন শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে মামলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রতারক মারুফ শেখকে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।