সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে করা এক সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তারা।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ভিসি ফরিদউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক পরদিন আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা এলো। এর আগে শাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে শুক্রবার সকালে সিলেটে যান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সংবাদ সম্মেলন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হোক। বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিকভাবে চলুক।
তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শুক্রবার অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। তিনি আমাদের প্রায় সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে আমাদের মূল দাবি উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি আচর্যকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে মন্ত্রীকে (শিক্ষামন্ত্রী) অবগত করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের উপর যে দুইটি মামলা হয়েছে সেটা অতিদ্রুত প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা হবে। বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মোবাইল সিম ও মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ থাকার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে সকল নাম্বার ও মোবাইল ব্যাংকিং সচল করা হবে। পুলিশের স্প্লিন্টারে আহত সজল কুন্ডুসহ অনশনকারী সকল শিক্ষার্থীর সুচিকিৎসা চলমান আছে এবং থাকবে। এছাড়া মন্ত্রী সজল কুন্ডুর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তার চাকরির ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। পরে ১৯ জানুয়ারি থেকে একই স্থানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী।
এরপর ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক জনপ্রিয় লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের সপ্তাহব্যাপী করা অনশন পানি পান করিয়ে ভাঙান। তবে অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। অবশেষে শনিবার তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলন শুরু হয়। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। মূলত এরপর থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।