সারাদেশে কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। শিমুলিয়া ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীর পাশাপাশি শহর ছেড়ে যাওয়া মানুষজনেরও চাপ বেড়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ির (প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস) সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো।ফেরি পারাপার হচ্ছেন হাজারও মানুষ। ফেরিতে পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি যানবাহন থেকে যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। তবে কাউকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। আবার অনেকে মুখে মাস্কও পরেননি।
আজ শনিবার (২৬ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফেরিতে পণ্যবাহী গাড়ির চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িই বেশি পারাপার হচ্ছে। একই সঙ্গে পারাপার হচ্ছে জরুরি সেবামূলক অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য গাড়ি। নৌপথে লঞ্চ-স্পিডবোট বন্ধ থাকায় ফেরি বোঝাই হয়ে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া আসছে মানুষজন।
বেশিরভাগ যাত্রীর মুখে কোনো মাস্ক নেই। কয়েকজনকে মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর না দিয়ে দ্রুত হেঁটে গেলেন। আবার অনেকে দিলেন বিভিন্ন অজুহাত।
এদিকে ঘাটে আসার পথে সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা কুচিয়ামোড়ায় রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। এ চেকপোস্টে সামনে ছোট পরিবহনের জট লেগেই রয়েছে। পুলিশের জেরার মুখে নানা অজুহাত দিয়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেখিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে যাত্রীরা।
এদিকে মুন্সিগঞ্জসহ ৭ জেলায় লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে ভেঙে ভেঙে যাত্রীরা পার হচ্ছে। ফলে গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।
শরিয়তপুর জেলা থেকে আসা ঢাকামুখী যাত্রী মো. মাসুম বলেন, যাত্রাবাড়ী যাচ্ছিলাম এক আত্মীয় অসুস্থ, তাকে বাড়ি আনতে। কিন্তু শিমুলিয়া ঘাটে এসে গাড়িতে উঠতে গেলে প্রাইভেটকার চালক যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ৪০০ টাকা দাবি করেন। আমার কাছে এতো টাকা নেই, তাই বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি।
এদিকে শুক্রবার ছুটির দিনেও শিমুলিয়া ঘাটে সারাদিন যাত্রীচাপ ছিল। সকাল থেকে শুরু হওয়া যাত্রীচাপ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়তে থাকে। এর মধ্যে রাতে ঘোষণা আসে সোমবার থেকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হচ্ছে।
এজন্য শনিবার ভোরে উভয়মুখী যাত্রীচাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। সরকার ঘোষিত লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের ফেরিতে গাড়ি ও যাত্রী পারাপার হচ্ছে। কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণার আশঙ্কায় যাত্রীদের ভিড় বেড়ে গেছে ঘাটে। সড়কে চেকপোস্ট বসিয়েও আটকানো যাচ্ছে না মানুষজনকে।
বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। ঘাটে ছোট গাড়ির চাপ বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই পণ্যবাহী ও সেবামূলক কাজে নিয়োজিত গাড়ি পারাপার হচ্ছে।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জাকির হোসেন জানান, লকডাউনের নির্দেশনা মানার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু যাত্রীরা বিভিন্নভাবে ঢাকা থেকে ঘাটে আসছে। আবার বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসা যাত্রীরা ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করছে।
লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী, শুধু পণ্যবাহী ও জরুরি যান পারাপারের কথা থাকলেও যাত্রীরা ঘাটে আসছে। ফেরিতে গাড়ি ওঠানোর সময় তারা ফেরিতে উঠে পড়ছেন এবং ছোট গাড়িগুলোও পণ্যবাহী গাড়ি উঠানোর সময় উঠে যাচ্ছে।