সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিশুদের সচেতন ও দক্ষ করার প্রকল্পে সফল সরকার | চ্যানেল খুলনা

শিশুদের সচেতন ও দক্ষ করার প্রকল্পে সফল সরকার

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ শিশুদের নানা রকম বিকাশে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এজন্য ‘চাইল্ড সেনসেটিভ সোশ্যাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ’ নামে প্রকল্প বাস্তবায়নও করা হয়েছে। এর ফলে শিশুদের ওপর গুণগত প্রভাব পড়েছে বলে মূল্যায়ন করেছে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) বিভাগ। গত এপ্রিলে প্রকল্পটির প্রভাব মূল্যায়ন করে এ তথ্য দিয়েছে আইএমইডি।

আইএমইডি বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে শিশুদের উপর গুণগত প্রভাব পড়েছে। যেমন অনেক শিশু পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে তারা সচেতন হয়েছে এবং সমস্যা মোকাবিলার ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করেছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় অনেক শিশু বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে। যৌন নির্যাতনের ভয় থেকে অনেকাংশ মুক্ত হয়েছে এবং মাদক সেবন থেকে বিরত থাকছে।

আইএমইডি জানায়, প্রকল্পের আওতাভুক্ত উপকারভোগী পরিবারের শিশুদের সুরক্ষা অ-সুবিধাভোগী শিশুদের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। যেমন স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে উপকারভোগী পরিবারের ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু। অন্যদিকে অ-উপকারভোগী পরিবার থেকে ঝরে পড়েছে ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ শিশু। এছাড়া এই দুই পরিবারের মধ্যে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- শিশুশ্রমের হার যথাক্রমে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ ও ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ। শিশু বিয়ের চিত্র হচ্ছে- সুবিধাভোগীদের ক্ষেত্রে ১১ দশমিক ২ শতাংশ এবং অ-সুবিধাভোগীদের ক্ষেত্রে ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

এ বিষয়ে আইএমইডি’র সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়েজ উল্লাহ সারবাংলাকে জানান, আমরা প্রতিবেদনগুলো চূড়ান্ত করেছি। শিগগিরই এগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সমাপ্ত প্রকল্পের প্রভাব মূল্যায়ন করে লাভ কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এত টাকা খরচ করে যখন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়, তখন সেটি থেকে কি সুবিধা পাওয়া গেছে বা আরও কি সুবিধা পাওয়া যেত বা ভুল ক্রুটি কি ছিল এসব বের করা গেলে পরবর্তীতে একই ধরণের প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে এসব বিষয় অবশ্যই বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ থাকে।
আইএমইডি বলছে, ‘চাইল্ড সেনসেটিভ সোশ্যাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধিত প্রাক্কলিত ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৬৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৬৪ কোটি ৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ হয়েছে ৬৩ কাটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প পরিচালকদের বেতন সরকারি বরাদ্দ থেকে দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ইউনিসেফ ও সরকারের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় অতিদরিদ্র পরিবারের শিশুদের উন্নয়নে কাজ করার উদ্দেশ্যে বাস্তবায়িত হয়।

প্রকল্পটি ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল সমাজসেবা অধিদফতরের। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় ২০১৭ সালের ৩০ জুন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শেষ হয়। এটি বাস্তবায়িত হয়েছে ঢাকা সদর, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল সদর, বরগুনা, পটুয়াখালি, ভোলা, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, জামালপুর, নেত্রকোনা, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলায়।

আইএমইডির প্রতিবেদনে ফলাফল ও প্রভাব সম্পর্কে বলা হয়ছে, প্রকল্পের মাধ্যমে শর্তযুক্ত অর্থ সহায়তার পাওয়ার পর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ সুবিধাভোগী সহায়তার অর্থ বিনিয়োগ করেছে। বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রগুলো হলো- গরু, ছাগল পালন, ক্ষুদ্র ব্যবসা, রিকশা ভ্যান কেনা, জমি বাগান কেনা, বর্গা চাষ ও হাঁস মুরগি পালন ইত্যাদি। বিনিয়োগ করা অর্থ থেকে তারা মাসে প্রায় ২ হাজার টাকা থেকে ৬ হাজার টাকারও বেশি আয় করেন। এ প্রকল্পের আওতায় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজ সেবা অধিদফতর এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৩৬৩ জন কর্মকর্তাদের মৌলিক সমাজ সেবা প্রশিক্ষণ (বিএসএসটি) এবং পেশাগত সমাজসেবা প্রশিক্ষণ (পিএসএসটি) দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের ফলে কর্মকর্তাদের কাজের গতি বৃদ্ধি, দৃষ্টিভঙ্গিও ইতিবাচক পরিবর্তন, পারিবারিক কাউন্সেলিং করার দক্ষতা এবং কেসস্টাডি তৈরি করার সক্ষমতা বেড়েছে।

সেকেন্ডারী উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রকল্পকালীন চাইল্ড হেল্পলাইনের মাধ্যমে ১ লাখ ৭ হাজার ৪৮১ জন শিশু, যুব, ছাত্র, শিক্ষক এবং মা-বাবা ফোন করেছে। এছাড়া চাইল্ড হেল্পলাইন সেবার মাধ্যমে ৮৮৮ জন শিশুর বাল্য বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া এ সেবার মাধ্যমে অনেক শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় রেফার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত এবং উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়া হয়েছে ৩৪ হাজার ২৯০ জন শিশুকে। উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে এক তৃতীয়াংশ শিশু পাশ করেছে (গ্রাজুয়েশন) এবং এদের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ শিশু আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়েছে। এছাড়া এ সব শিশুর স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয়েছে এবং জটিল শারীরিক সমস্যার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রেফার করা হয়েছে। অন্যান্য সেবার মধ্যে রয়েছে, মনো-সামাজিক কাউন্সেলিং, আইনি সহায়তা, জীবন দক্ষতামূলক শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, বিনোদন ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, প্রকল্প চলাকালীন (২০১২ সালের জুলাই হতে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত) মোট ৬ জন জাতীয় প্রকল্প পরিচালক দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রকল্প পরিচালকদের মধ্যে কেউ কেউ মাত্র ১ মাস, ২ মাস বা ৩ মাস দায়িত্ব পালন করেন। ক্রয় কার্যক্রম, ইউনিসেফ তার নিজস্ব পলিসি অনুসরণ করেছে। সে মোতাবেক ইউনিসেফ ক্রয় কার্য সম্পাদন করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পের দুর্বল দিকগুলো হচ্ছে- সময়মত অর্থ ছাড় না করার ফলে শর্তযুক্ত অর্থ সহায়তায় অর্থ সময়মত বিতরণ করতে না পারা। প্রকল্প চলাকালীন অর্থাৎ ৫ বছরে মোট ৬ বার জাতীয় প্রকল্প পরিচালনা পরিবর্তন করা হয়েছে। মনিটরিং ও ফলো-আপ দুর্বল, শিশুকে পরিবারে পুনঃএকত্রীকরণের জন্য নিয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত অভিভাবক খুঁজে পাওয়া যায় না। দেখা যায় বাবা নেই, মা বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। আত্মীয়রা শিশুটিকে নিতে চায় না অথবা নিলেও পরবর্তীতে শিশুটি পরিবার থেকে আবার রাস্তায় চলে আসে। শিশুদের পরিবারে দিতে হলে তাকে তৈরি করতে সময় দরকার হয় অথচ অল্প সময়ে ওরিয়েন্টশন দিয়ে পরিবার পুনঃএকত্রিকরণ করলে শিশু পরিবার টিকে থাকে না। যে সব শিশুকে থানা থেকে রেফার করা হয় সে সব শিশুকে জরুরি রাত্রিকালীন আশ্রয়স্থলে রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। কারণ শিশুটি অপরাধে সাথে জড়িত থাকায় অন্যশিশুদের মাঝে তার প্রভাব পড়ে। এই সব শিশুদের জন্য আলাদা শেল্টার দরকার।

আইএমইডির সুপারিশগুলো হচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা, পূর্ণ প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা, শর্তযুক্ত অর্থ সহায়তা বাড়ানো, চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ এর সম্প্রসারণ, কেস ম্যানেজমেন্ট, বিনা খরচে পড়াশুনার করার ব্যবস্থা করা, শক্ত মনিটরিং, এক্সিট পরিকল্পনা করা, প্রশিক্ষণ, পার্টনার এনজিও নির্বাচনে সচেতন হওয়া, শিশু আইনের আওতায় বিকল্প পরিসেবা বাস্তবায়ন করা, কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং মেয়েদের জন্য শেল্টার হোমের ব্যবস্থা করা।

https://channelkhulna.tv/

সারাদেশ আরও সংবাদ

নিষেধাজ্ঞার ১০ দিনে বরিশালে ২৫২ জেলের কারাদণ্ড

মুক্তিপণ আদায়ে পর্যটকদের আটকে রাখা হতো টর্চার সেলে

নাগরপুরে ভারড়া ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

সিলেটের পাথর রাজ্যের ‘লর্ড’ আ.লীগ নেতা কালা মিয়া গ্রেফতার

দিনেদুপুরে গৃহবধূর গলা কেটে নগদ অর্থ-স্বর্ণালংকার লুট

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রিমান্ডে পল্লী বিদ্যুতের ৬ কর্মকর্তা

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।