সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শূন্য থেকে কোটিপতি সাদিয়া, শুকুরকে খুঁজছে পুলিশ | চ্যানেল খুলনা

শূন্য থেকে কোটিপতি সাদিয়া, শুকুরকে খুঁজছে পুলিশ

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ সোনা চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদিকা সাদিয়া আক্তার মুক্তা বড় ধরনের অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। হঠাৎ করেই তিনি প্রায় শূন্য থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) দক্ষিণের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ এহসান শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সব রহস্য উন্মোচনের জন্য সাদিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাদিয়ার স্বামী শুকুর আলীকে পুলিশ খুঁজছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ সরদার ও মৃত মোসাম্মৎ ফরিদা বেগমের দ্বিতীয় মেয়ে সাদিয়া। বাবা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার পাশে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন। প্রায় দেড় যুগ আগে ঢাকার জুরাইন এলাকার ছেলে শুকুর আলীর সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। এ সময় শুকুর জমির দালালি ও পরিবহনে চাকরি করতেন।

সাদিয়া রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর বনিবনা হয়নি। যার ফলে তিনি কয়েক বছর আগে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি বাগিয়ে আনেন। পরে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সাদিয়াকে দেখা যায়। তবে নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ জুলাই তাঁকে পদ থেকে বহিষ্কার করে যুগ্ম সম্পাদক জাহানারা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়।

রাজনীতি অঙ্গনে বড় বড় আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সাদিয়ার সখ্য ছিল। এমনকি খুলনা মহানগর পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার মজিদ সরণিতে অবস্থিত ‘গুহা ইন খুলনা’ রেস্টুরেন্টের ব্যবসা রয়েছে সাদিয়া-শুকুর দম্পতির, যা খুলনার মধ্যে একমাত্র মাটির নিচে থাকা রেস্টুরেন্ট। মার্চ মাসের শুরুতেই সাদিয়া দম্পতি সর্বশেষ এই রেস্টুরেন্টে এসেছিলেন। তবে সাদিয়া আটকের কিছুদিন আগে থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নেই রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক জিহাদ আল মামুনের সঙ্গে।

জিহাদ আল মামুন বলেন, শুকুরের ভাই লিটনের মাধ্যমে তাঁরা এই রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, কিছুদিন আগে র‍্যাবের কর্মকর্তারাও রেস্টুরেন্টের মালিক সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে এসেছিলেন।

এদিকে নগরীর হরিণটানা থানার রাসেল সড়কে অবস্থিত এই দম্পতির চারতলা ভবন। সরেজমিনে গিয়ে বাড়ির সামনে একটি এবং গ্যারেজে চারটি মোটরসাইকেল দেখা যায়। যার বেশিরভাগের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নেই। ভবনের নিচের তলার একটি ফ্ল্যাটে সাদিয়ার বড় ভাই মানিক সরদার এবং অপরটিতে ভাড়াটিয়া রয়েছেন। ওপরের সব ফ্ল্যাটে সাদিয়া-শুকুর থাকেন। পুরো বাড়ি সিসি ক্যামেরা দিয়ে আবদ্ধ। রয়েছে পাজেরো গাড়িও।

সাদিয়ার বড় ভাই মনিক বলেন, ‘আমার বোন ষড়যন্ত্রের স্বীকার। সে কোনো ধরনের চোরাই স্বর্ণের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নয়। তবে রাজনীতি করার সময় তার অনেক শক্র হয়েছে। এ ছাড়া শুকুর জমির ব্যবসা করার কারণেও শত্রু বেড়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েল পেছনে শুকুরের চার কাঠা জমি আছে, যা নিয়ে পাশের লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা আছে।’

তবে মানিক স্বীকার করেন, শুকুর কয়েক দিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন।

এ ঘটনার বিষয়ে সাদিয়ার স্বামী শুকুর আলীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন এবং খুদে বার্তা দিলেও তিনি কোনো কথা বলেননি বা জবাব দেননি।

খুলনা মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রণজিদ কুমার ঘোষ জানান, ২০১৪ সালের দিকে কেন্দ্র থেকে মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে খুলনায় আসেন এই সাদিয়া আক্তার মুক্তা। দলীয় নানা অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। কিন্তু দলীয় পদ ব্যবহার করে হঠাৎ অর্থবিত্তের মালিক বনে যাওয়া এবং তাঁর বিরুদ্ধে নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আসতে থাকে। একের পর এক এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ জুলাই সাদিয়া আক্তার মুক্তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই সময় ঢাকার একাধিক নেতা সাদিয়ার পক্ষ নিয়ে তাঁকে নানা ধরনের হুমকিও দেন। বিষয়টি মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দও জানেন। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাহাবুবুল আলম সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

মাহাবুবুল আলম সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিও মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিয়াকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তিনিও স্বীকার করেন, সাদিয়া আক্তার মুক্তা কেন্দ্র থেকে পদে নিযুক্ত হওয়ার চিঠি এনেছিল। তবে তিনি অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিতে রাজি হননি।

সাদিয়া আক্তার মুক্তার ফেসবুকে দলীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ছবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সোহাগ বলেন, দলের যখন নেতা ছিল, তখন তো ছবি থাকতেই পারে।

কেএমপির ডিসি মোহাম্মদ এহসান শাহ স্বীকার করেন, রাতারাতি এত অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। তিনি বলেন, নগরীর বাবু খান রোডের বাড়িতে চুরি হওয়া সোনার মধ্যে ১২ ভরি তিন আনা সোনা ও সোনা বিক্রির দুই লাখ ৮২ হাজার টাকা সাদিয়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে একটি বড় সিন্ডিকেট এ ঘটনায় যুক্ত রয়েছে বলে তাঁদের ধারণা। এই কেনাবেচার সঙ্গে বড় ব্যবসায়ীসহ সিন্ডিকেট যুক্ত। সোনা চোরাই সিন্ডিকেটের হোতা সাদিয়া ও তাঁর গ্যাং।

ডিসি এহসান শাহ বলেন, সম্প্রতি খুলনা মহানগর পুলিশের একটি বিশেষ টিম বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনসহ প্রযুক্তির মাধ্যমে সাদিয়াকে আটক করেছে। সাদিয়া আটক হওয়ার পর তাঁর স্বামী শুকুর পালিয়ে যান। সাদিয়াকে সোনা চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আজ রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

এহসান শাহ জোর দিয়ে বলেন, সাদিয়া-শুকুর দম্পতির হঠাৎ বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হওয়া নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ তাঁর অর্থের উৎস নিয়েও তদন্ত করবে।

https://channelkhulna.tv/

আইন ও অপরাধ আরও সংবাদ

খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী রকি গ্রেপ্তার

আন্ত:জেলা নারী পাচারকারী চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার

ফকিরহাটে ইয়াবাসহ মাদক কারবারী গ্রেফতার

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ফকিরহাটের এক সাংবাদিকের ছেলে

খুলনায় সন্ত্রাসী হাড্ডি সাগর গ্রেপ্তার

দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মৃত্যু

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।