দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের বৈঠকটি ভার্চুয়ালি হচ্ছে। অর্থাৎ গণভবন থেকে যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের নয়াদিল্লি প্রান্ত থেকে যোগ দেবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বৈঠকে উদ্বোধন করা হবে ১৯৬৫ সালের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলসংযোগ। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর ওই রেলপথ ধরে এক দেশ থেকে অন্য দেশের যাবে ট্রেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটায় বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এক বছর দুই মাসেরও বেশি সময় পর বৈঠকে বসছেন বন্ধুপ্রতীম দু্ই দেশের নেতা। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন। ওই সম্মেলনের ফাঁকে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি।
আলোচনায় প্রাধান্য পাবে যে বিষয়গুলো
করোনা-পরবর্তী সহযোগিতা
বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানো
সীমান্ত হত্যা বন্ধ করে সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা
অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনসহ দুই নিকট-প্রতিবেশীর সম্পর্কের নানা দিক
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আভাস দিয়েছিলেন, বড় বড় ইস্যুগুলো আলোচনায় তোলা হবে। এই শীর্ষ বৈঠক নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে
‘দুই শীর্ষ নেতা করোনা-পরবর্তী সময়ে সহযোগিতা আরও জোরদার করাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করবেন। করোনা মহামারিতে দুই নেতা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।’
আরও পড়ুন**শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি বৈঠক ১৭ ডিসেম্বর
চার চুক্তি সই ও তিন প্রকল্পের উদ্বোধন-
দুই প্রধানমন্ত্রীর ভার্চ্যুয়াল বৈঠকটি শুরুর আগে রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই দেশের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে।
এগুলো হলো-
হাইড্রোকার্বনে সহযোগিতার বিষয়ে রূপরেখা
হাতির সুরক্ষায় অভয়ারণ্য নিশ্চিত করা
বরিশালে প্রকল্প স্থাপন
হাই ইমপেক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প
বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল আলোচনার শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ একটি স্মারক ডাকটিকিটের উদ্বোধন করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ভারতের ডাক বিভাগ ডাকটিকিটটি বের করেছে। এরপর ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল জাদুঘর’-এর প্রমো দেখানো হবে।
এ ছাড়া উদ্বোধন করা হবে ১৯৬৫ সালের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলসংযোগ। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর ওই রেলপথ ধরে এক দেশ থেকে অন্য দেশের গন্তব্যে যাবে ট্রেন।
অন্যান্য বিষয়-
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গত ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আসার কথা ছিল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে তা পিছিয়ে যায়। ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বছরের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানাবেন। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের ১৭ মার্চ বা ২৬ মার্চ ঢাকায় আসতে পারেন মোদি।
ভারতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নানা ধরনের অশুল্ক বাধা এখনো রয়ে গেছে। সেই সঙ্গে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিন’-এর মতো বিষয়গুলো বাংলাদেশ তুলবে। বাগেরহাটের মোংলা আর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভারতের বিনিয়োগের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এসব এলাকায় কাজ শুরুর তাগিদ থাকবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।