যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া মডার্নার তৈরি আরও সাড়ে ১২ লাখ টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে। শনিবার (৩ জুন) সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে বিশেষ বিমানে এসব টিকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এ নিয়ে মডার্নার মোট ২৫ লাখ টিকা দেশে এলো।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা টিকা আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না থেকে বাকি সাড়ে ১২ লাখ টিকা সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় এসেছে। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এসব টিকা বিমানবন্দরে রিসিভ করেন।
এর আগে শুক্রবার (২ জুলাই) রাত ১১টা ২১ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৫৮৪ ফ্লাইটে করে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মডার্নার সাড়ে ১২ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে এসব টিকা পাঠানো হয়েছে। মডার্নার টিকা নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের চারটি টিকা এলো। ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, চীন থেকে সিনোফার্মের টিকা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফাইজার ও মডার্নার টিকা এসেছে দেশে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট এক টুইট বার্তায় জানায়, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দিয়ে সহায়তা করছে। কোভ্যাক্সের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে মডার্নার ২৫ লাখ টিকা ভাগাভাগি করে নিয়েছি। আমরা একসঙ্গে একটি সুরক্ষিত পৃথিবী গড়ব যেখানে ভবিষ্যত মহামারিগুলোর বিরুদ্ধেও সুরক্ষিত থাকা যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে মডার্না এবং সিনোফার্মের মিলিয়ে মোট ৪৫ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসছে। এ সময় তিনি দেশে টিকার সংকটকালে একসঙ্গে এতগুলো টিকা আসার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
দেশব্যাপী গণটিকা কার্যক্রম প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা টিকার জন্যই অপেক্ষা করছি। ৪৫ লাখ ডোজ টিকা হাতে পেলেই আমরা আগের মতো টিকা কর্মসূচি শুরু করতে পারব।
২৭ জুন ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর দেশে মডার্নার টিকার জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন দেয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে টিকাটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর জানিয়েছে, মডার্নার টিকা ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সীদের দেওয়া যায়। প্রত্যেককে এই টিকার দুই ডোজ করে দিতে হয়। টিকাটির প্রথম ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এ টিকা সংরক্ষণ করতে হয়। টিকাটি ব্যবহারের আগে ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৩০ দিন এবং ৮-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।
মডার্নার এই টিকা গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে। এর আগে গতবছরের ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ এবং ৬ জানুয়ারি ইউরোপিয়ান মেডিসিন অথরিটির অনুমোদন পায় টিকাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মডার্নার টিকা করোনার বিরুদ্ধে ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। বাংলাদেশে এই টিকার স্থানীয় প্রতিনিধি এমএনসি অ্যান্ড এএইচ, স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।