করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ এড়াতে সরকারি অফিসগুলোতে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ ও রোস্টার ডিউটি সুবিধা আর থাকছে না। এখন থেকে স্বাভাবিক সময়ের মতো সবাইকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সশরীরে উপস্থিত থেকে অফিসের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
গত সোমবার (৩ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের এ বিষয়ে মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেও অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
এর আগে, ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা ছিল। এরপর সীমিত পরিসরে সরকারি অফিস খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই সময় মৌখিকভাবে জানানো হয়, মন্ত্রণালয়সহ সরকারি অফিসগুলোতে ২৫ শতাংশ জনবল সশরীরে উপস্থিত থেকে অফিস করবেন। বাকিরা বাসায় বসে কাজ করতে পারবেন। তবে অসুস্থ, গর্ভবতী ও বয়স্কদের অফিসে একেবারেই না আসার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী রোস্টারভিত্তিক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস করতেন।
বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন থেকে সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকেই স্বাভাবিক সময়ের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে হবে। এবার কেবল অসুস্থ, গর্ভবতী ও বয়স্কদের অফিসে না আসতে বলা হয়েছে।
সচিবালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পেয়ে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় তা কার্যকরের উদ্যোগ নিয়েছে। নিজেদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছে। বাকিরাও এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে, গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হলে ২৬ মার্চ থেকে সরকার সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিসে ১০ দিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে আরও ছয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে সাধারণ ছুটি চলে টানা ৬৬ দিন, ৩০ মে পর্যন্ত।
এরপর ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস-আদালত খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। ওই সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতিও দেয় সরকার। পরে ধীরে ধীরে অফিস-আদালত ও চলাচলে বিধিনিষেধ ক্রমেই শিথিল হয়েছে। সবশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে সবাইকে। এছাড়া বাড়ির বাইরে বের হলে সবসময় মাস্ক পরা ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আদেশে হাটবাজার, দোকান ইত্যাদিতে বাড়তি সতর্কতা রাখতে এবং রাত ৮টার মধ্যে এগুলো বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। এবার সরকারি অফিসগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে নিয়ে আসার নির্দেশনা দেওয়া হলো।