বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, গত সপ্তাহে কুড়িগ্রামে অবস্থিত বন্ধথাকা সরকারি টেক্সটাইল মিল বেসরকারি খাতে লিজের মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। লিজ গ্রহীতা হিসেবে ব্যবসায়ীরা সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এ সপ্তাহে আরো তিনটি মিল লিজ প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যায়।
উপদেষ্টা সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের খুলনা দৌলতপুর জুট মিলের উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাটকল চালুর ক্ষেত্রে কেবল হাজার কোটি টাকা লোকসান ছাড়া দীর্ঘ মেয়াদে ফলপ্রসূ কিছুই হয়নি। তাই সরকারের মালিকানায় থাকা জুট ও টেক্সটাইল মিলগুলো ব্যক্তিখাতে ছেড়ে দেওয়ায় পরিকল্পনা রয়েছে। দেশে বিদ্যমান সকল পাটকল চালু রাখতে বছরে প্রায় ৪০ লাখ মেট্রিক টন পাটের প্রয়োজন কিন্তু দেশে পাটের উৎপাদন কেবল ১২ লাখ মেট্রিক টন। উপরন্তু সারাবিশ্বে বার্ষিক পাটের উৎপাদন মাত্র ২৫ লাখ মেট্রিক টন। সেক্ষেত্রে কেবল পাট দিয়ে এতগুলো প্রতিষ্ঠান চালু রাখা বাস্তবসম্মত নয়। তাই পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে লিজ প্রদানের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করে পাটভিত্তিক শিল্পের পাশাপাশি অন্য শিল্প কারখানা স্থাপনের সুযোগ রাখা হচ্ছে।
বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আরও বলেন, খুলনার দৌলতপুর জুট মিলটি বেসরকারি উদ্যোগে চালু হওয়ায় প্রায় সাতশত লোকের কার্মসংস্থান হয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে এখানে আরো তিন হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এধরণের সফল উদ্যোগ ও বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের পথ খুলে যাবে। মিলটিতে বেসরকারি উদ্যোগে পাটপণ্য এবং জুতোর উৎপাদন একসাথে চালু রেখে ইতিবাচক ও লাভজনক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এধরণের উদ্ভাবনী উদ্যোগ সরকারিভাবে বাস্তবায়ন ততটা ফলপ্রসূ হয়না।
বন্ধ হওয়া ৫ টি পাটকল শ্রমিকরা বকেয়া পায়নি এমন দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে এ ব্যাপারে বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে কোনো বকেয়া নাই।
উপদেষ্টা গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কারসাজির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সিন্ডিকেট সরকারের চেয়ে শক্তিশালী নয়। দেশে বিভিন্ন পণ্যের মজুদ ও সরবরাহের ওপর সরকারের নজরদারি রয়েছে। এই মুহুর্তে ভোজ্যতেলের বাজারে যে সাময়িক সংকট রয়েছে তা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে কেটে যাবে।
পরিদর্শনকালে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও দৌলতপুর জুট মিলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।