বাগেরহাটের ফকিরহাটে অতি বৃষ্টির প্লাবনে প্রায় ৯০ ভাগ মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চিংড়ি ও সাদা মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে মৎস্য চাষিরা। এই বিপদের মুহুর্তে মৎস্য বিভাগ পাশে নেই বলে অভিযোগ করেছেন মৎস্য চাষিরা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্র্তার অফিস থেকে দেওয়া তথ্য মতে, ফকিরহাটে ৩ হাজার ২১০ টি বানিজ্যিক মাছের ঘের ও পুকুর ডুবে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু চাষিরা এ তথ্যকে মনগড়া বলেছেন। মাছ চাষি শুভ শেখ, বাবু ফকির, নাদিম মাহমুদ, হাফিজ সরদার সহ অনেকে জানান, ক্ষতির পরিমান প্রায় শত কোটি টাকা। চাষিদের অভিযোগ মৎস্য অফিস থেকে কোন দিক নির্দেশনা না পাওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মাছ চাষের সাথে জড়িত। ফলে মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়ায় এই এলাকার অর্থনীতিতে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বলে জানান মৎস্য বিপননের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার মূলঘর, নলধা মৌভোগ ও শুভদিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়। একাধিক মাছ চাষী জানান, তিন দিন ধরে টানা অতিরিক্ত বর্ষণে ও জলবদ্ধতায় উপজেলার ৯০ভাগ মাছের ঘের তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। কোন কোন ঘেরে নেট দিয়ে মাছ আটকে রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে চাষিদের। উপজেলার ভৈরব, চিত্রা, কালীগঙ্গা সহ নদী ও খালে জাল ফেলে ঘের থেকে বের হয়ে যাওয়া মাছ ধরছে মানুষজন।
মাছ চাষ ও বিপনন কাজের সাথে জড়িত শেখ মনিরুজ্জামান, হারুন মল্লিক সহ কয়েকজন জানান, ঘেরের প্রতি বিঘা জমির হারী (ভাড়া), ঘের প্রস্তুত ও মাছ দিতে গড়ে এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। উপজেলায় সাধারণত ১ বিঘা থেকে শুরু করে ৩০ বিঘা পর্যন্ত ঘের রয়েছে। ফলে ক্ষতির পরিমান শত কোটি টাকার বেশি হবে। অনেক চাষি ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেছে। একই মৌসূমে দুই দুই বার প্লাবনে মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা জ্যোতি কনা দাস জানান, খাল ও নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন পথ রুদ্ধ হয়েছে। ফলে অতিবৃষ্টিতে মাছের ঘেরগুলো ডুবে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।