বর্তমান অবৈধ ফ্যাসিষ্ট সরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করণের বাসনা চরিতার্থ করার লক্ষে একের পর এক বিএনপি নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামের বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারী নেতা মাহফুজুর রহমান সাবুকে কারাগারে চিকিৎসায় অবহেলা করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
তিনি বলেন, গত ১৩ বছরে বিএনপির প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করে হত্যা করা করেছে সরকার, হাতে, পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে। কারা অভ্যন্তরে থাকা অবস্থায় ১৪ জুন বিকাল সাড়ে ৩টায় বিএনপি নেতা সাবু অসুস্থ হয়ে পড়লেও তার পরিবার-পরিজনকে কোন খবর দেয়া হয়নি। অসুস্থ হওয়ার ২ঘন্টা পরে বিকাল সাড়ে ৫টায় কারাগার থেকে বের করে রাত ৯টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ৯টায় একজন কারারক্ষীর মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছে পরিবারের সদস্যরা বিএনপি নেতা সাবুর মরদেহ দেখতে পান। কারা অভ্যন্তরে কোন বন্দি মারা গেলে মরদেহের ময়না তদন্তের নিয়ম থাকলেও সাবুর ক্ষেত্রে তা হয়নি। ১৫ জুন বেলা পৌঁনে ১২টায় পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে বর্তমান সরকার যেভাবে গুম-খুন করছে, সেভাবেই সাবুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। বুধবার (১৬ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় আওয়ামী লীগ সরকারের দেয়া মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ অবস্থায় নিপীড়ন ও বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণকারী সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজুর রহমান সাবুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মঞ্জু বলেন, সাবেক সাংসদ নাসির উদ্দিন পিন্টুকে যেভাবে কারা অভ্যন্তরে হত্যা করা হয়েছে সেভাবেই সাবুকে হত্যা করেছে সরকার। সরকার মিথ্যা মামলায় হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে কারাগারে নিয়ে নিপিড়ন করছে। বর্তমান সরকারের ১৩টি মিথ্যা মামলার আসামী মরহুম মাহফুজুর রহমান সাবু ২০১৭ সালে কারারুদ্ধ অবস্থায় স্ট্রোকের কারণে দুই চোখ অন্ধ হয়ে যাবার পরও বর্তমান সরকার তাকে মিথ্যা মামলায় আসামী করে এবং সাজা দেয়। ২০০২ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাতক্ষীরা সফরকালে গাড়ির বহরে কথিত হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা যা গত ২০১৪ সালে হাইকোর্টের আপিল আদেশের প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা আদালতে দাখিলকৃত হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারীতে আদালত কর্তৃক ৪ বছর সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপি নেতা সাবু আদালতে আত্মসমর্পন করেন। পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতার খবর কেন দেয়া হলো না প্রশ্ন রেখে মঞ্জু বলেন, পরিবার-পরিজনকে খবর না দিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করে হাসপাতালে ভর্তি কিসের ইঙ্গিত বহন করে? বিকাল সাড়ে ৫টায় কারাগার থেকে বের করে রাত ৯টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সাবুকে। এই দীর্ঘসময় তাকে আর কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল? কেন তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হল না? তিনি বলেন সাবুর ওপর অমানবিক আচরণ করে বর্তমান সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। তিনি তদন্তপূর্বক সাবু হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, মহানগর সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, আমির এজাজ খান, মোশাররফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, অ্যাড. এস আর ফারুক, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, এড. শরিফুল ইসলাম খোকন, মাহবুব কায়সার, জিএম কামরুজ্জামান টুকু, আশরাফুল আলম নান্নু, মহিবুজ্জামান কচি, এড. তাছলিমা খাতুন ছন্দা, মুর্শিদুর রহমান লিটন, নাজমুস সাকিব পিন্টু, মিজানুর রহমান মিলটন, শামসুজ্জামান চঞ্চল, জাফরি নেওয়াজ চন্দন, শাহানাজ পারভিন, ওয়াজিউদ্দিন সান্টু, মিজানুর রহমান মিজান, খন্দাকার ফারুক হোসেন, মনির হোসেন, সামসুল বারি পান্না, মোহাম্মদ আলী, রাহাত আলী লাচ্চু, রেহেনা পারভিন, শেখ হেমায়েত হোসেন, সাহাবুদ্দিন মন্টু, মনিরুজ্জামান লেলিন, আবু সাঈদ শেখ, এনামুল হক সজল, আসাবুর রহমান পাইলট, মফিজুল ইসলাম মফিজ, শরিফুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, তানভির আলম, খালীদ হোসেন, খান রায়হান, সেলিম বড়মিয়া, বায়জিদ হোসেন, আবিদ আল রাহাত প্রমূখ।-খবর বিজ্ঞপ্তি