কক্সবাজারের টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা রাশেদ খানের মা নাসিমা আক্তারকে ফোন করে সমবেদনা ও সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী সিনহা রাশেদের মাকে ফোন করেন।
নাসিমা আক্তার বলেন, সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। ছেলের এমন মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, আমিও একই পথের পথিক। আপনাবে কিছু বলার মতো ভাষা আমার নেই। আমিও পুরো পরিবার হারিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, ছেলেকে ফিরে পাব না। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার হবে।
এদিকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় মাঠে নেমেছে তদন্ত দল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্তদলের প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার হিলডাউন সার্কিট হাউজে তদন্ত কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া তদন্ত কমিটির এ বৈঠক দীর্ঘ ৬ ঘণ্টাব্যাপী চলে।
এর আগে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। সোমবার সিনহা রাশেদকে ঢাকায় সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সবাইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত রোববার দুপুরে তাদের প্রত্যাহার করে কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়েছে। এখনো দায়িত্বে আছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস।
সিনহা রাশেদ খান ২০১৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। সেনাবাহিনীতে থাকার সময় তিনি স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেও (এসএসএফ) দায়িত্ব পালন করেন। এসএসএফের সদস্য হিসেবে তিনি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তায়ও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন উপসচিব প্রয়াত মো. এরশাদ খানের ছেলে। তিনি রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে ২০০১ সালে এইচএসসি পাস করেন। তিনি গত ৩ জুলাই ঢাকা থেকে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের তিনজন ছাত্রছাত্রীসহ ইউটিউব চ্যানেলের জন্য একটি ট্রাভেল ভিডিও তৈরি করতে কক্সবাজার আসেন। প্রায় এক মাস তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে শুটিং করেন।