বিদেশ থেকে কোনো যাত্রী বাংলাদেশে প্রবেশে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে করোনা নেগেটিভ সনদ। অথচ সিভিল অ্যাভিয়েশনের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে দিনের পর দিন করোনা যাত্রী আনছে কয়েকটি বিমান সংস্থা।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকায় আসে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট। বিকেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটের এক যাত্রীর করোনা পজিটিভ শনাক্ত করে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীরা।
কাতার এয়ারওয়েজের কিউআর৪১৯ বিমানযোগে আসা করোনা পজিটিভি ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ মুন্না। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিক কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে । এ ঘটনায় বিমান সংস্থাটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি যাত্রীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
২২ ডিসেম্বর বিকেলে লিবিয়া থেকে ১৫৩ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় অবতরন করে বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইট৷ সব যাত্রীর করোনা সনদ না থাকায় বিমানটিকে ৩ লাখ টাকা জরিমান করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর করোনা পজিটিভ যাত্রী আনায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয় ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজকে। একই সাথে যাত্রীকেও ৩ হাজার টাকা জরিমানা এবং হাসপাতালে পাঠানো হয়।
১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর করোনা সনদ ছাড়া যাত্রী এনে ২ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয় সৌদি এয়ারলাইন্সকে। ১৩ ডিসেম্বর করোনা পজিটিভ যাত্রী আনায় এয়ার এশিয়াকে ১ লাখ টাকা ও বাংলাদেশ বিমানকে করোনা সনদ ছাড়া যাত্রী আনায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ১০ ডিসেম্বর করোনা পজিটিভ সনদ ছাড়া যাত্রী আনায় মালদ্বীপ এয়ারলাইন্সকে ২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জরিমান করা হয়।
এ বিষয়ে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য ডেস্কের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, এমন ভুল একবার হলে পুরো জাতির জন্য সেটা হুমকি। আমরা বারবার চিঠি দিয়েও সব বিমানকে অনুরোধ করেছি সব যাত্রীর করোনা সার্টিফিকেট দেখে ফ্লাইট পরিচালনা করতে। কিন্তু এরপরও তারা ভুল করছে, যা মেনে নেওয়া যায় না। কোন যাত্রী কোনভাবেই আমাদের নজরের বাইরে যেতে পারবে না। আর যেসব বিমান ভুল করছে সামনে তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ আরও বড় কঠোর হতে বাধ্য হবে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল আহসান বলেন, আমাদের ব্যবস্থাপনা কঠোর থেকে কঠোরতর হয়ে গেছে। প্রথমে করোনা পজিটিভ যাত্রী আনলে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হতো। এরপর ২ লাখ টাকা। শুক্রবার সেটা বাড়িয়ে কাতার এয়ারওয়েজকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কোন বিমান সংস্থা ভুল করলে তার মাশুল দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সিভিল এভিয়েশন থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা সামনে এমন কাজ করবে তাদের এক থেকে একাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হবে। আমরা এই বিষয়টি আরও কঠোরভাবে পালন এবং ব্যবস্থা নেওয়া জন্য সিভিল অ্যাভিয়েশনকে চিঠি দেব। তাতেও কাজ না হলে সামনে আরও বেশি কঠোর হবো।
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিভিল অ্যাভিয়েশন) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, আমরা কঠোর হয়েছি সামনে আরও হবো। যারা এমন জঘন্য কাজ করেছে তাদের অর্থদণ্ড দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে কেউ ১ বার এমন ভুল করলে ১ দিনের জন্য ফ্লাইট বন্ধ করা হবে, দ্বিতীয়বার করলে ২ দিনের জন্য, তৃতীয়বার করলে এক সপ্তাহ এবং এরপরও ভুল করলে ১ মাসের জন্য ফ্লাইট বন্ধ করে দেবো। এটা যদি বাংলাদেশ বিমানও করে আমি তাদের ফ্লাইটও বন্ধ করে দেব। পুরো দেশ এটার উপর নজর রাখছে, এখানে কোন ছাড় হবে না।