অনলাইন ডেস্কঃআইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় বনদস্যুসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে র্যাব-৮ এর সাথে বনদস্যু খালেক বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধে বাহিনীর প্রধান খালেকসহ দুই দস্যু নিহত হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি। গতকাল মঙ্গলবার পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জোংড়াখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পরও একের পর এক আইন-শৃঙ্খনা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বেশ কয়েকজন বনদস্যু নিহত হয়েছে। এর আগে গত ২৯ মে চারজন ও ৬ মে তিনজন এবং ২৫ ফেব্র“য়ারি চারজন বনদস্যু র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
র্যাব-৮ এর অপারেশন কর্মকর্তা লেঃ খান সজিব আহম্মেদ জানান, সুন্দরবনে মধু, কাঁকড়া এবং মাছ আহরণকারীদের বিভিন্ন সময়ে ছোট ছোট জলদস্যু বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটকে রেখে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের পথ অবলম্বন করছে। এ সকল ছোট ছোট বাহিনী সুন্দরবনের বিভিন্ন রেঞ্জের নদী এবং নদী সংলগ্ন বিভিন্ন খাল এলাকায় নিরীহ জেলেদেরকে অপহরণ ও মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে এবং কৌশলে জেলেদের পরিবারকে ফোন করে জন প্রতি বিপুল অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
র্যাব-৮ সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারী, পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও স্থানীয় জনগণের তথ্যাদির উপর বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে সুন্দরবনের বিভিন্ন বনাঞ্চল, সুপতি, কচিখালী, কটকা, সুখতারা, শ্যালা, জামতলা বীচ, ডিমের চর, পীর চর, সোনারচর, দুবলার চর আলোর কোলসহ বনের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এমনই এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে অভিযানে নামে র্যাব-৮ এর একটি দল। বনের চাঁদপাই রেঞ্জের জোংড়া এলাকায় পৌঁছালে র্যাব সদস্যদের লক্ষ করে গুলি ছোড়ে দস্যুবাহিনী। র্যাবও তাদের আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ২-৩ ঘন্টা উভয়পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি চলে। গুলিবর্ষণ বন্ধ হলে টহল দল স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় বনের মধ্যে তল্লাশী শুরু করে। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী তল্লাশী করে টহল দল ২জন দস্যুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় তাদেরকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় র্যাব।
জেলেদের বক্তব্য অনুযায়ী তারা বনদস্যু ‘‘খালেক বাহিনীর’’ প্রধান খালেক ও তার সকেন্ড ইন কমান্ড বেল্লাল হোসেন বলে জানায় স্থানীয় জেলেরা। এ সময় জেলেরা তাদের এ সকল নির্মম অত্যাচারের কথা স্বীকার করেছে। বনে তল্লাশী চালিয়ে দস্যুদের ফেলে যাওয়া দেশি বিদেশি ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ বনের বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩টি একনালা বন্দুক, ৩টি ওয়ান শ্যুটারগান, ৪টি পাইপগান ও দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ প্রচুর পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এছাড়া জলদস্যুদের ব্যবহৃত কাপড় এবং আস্তানায় রক্ষিত বিপুল পরিমাণ রসদ সামগ্রী ও তৈজষপত্র উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা। অস্ত্র ও গুলিসহ বনদস্যুদের লাশ দাকোপ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানায় র্যাব সদস্যরা।
এ ঘটনায় মৃত দেহ ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র গোলাবারুদ দাকোপ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর র্যাব বাদী হয়ে (৭ ও ৮, তাং- ২৩/০৭/১৯) পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেছে বলে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ সফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান।
মেহেরপুর : জেলার দুইপক্ষের গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছে। নিহত হামিদুল ইসলাম মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি পুলিশের। রাত তিনটার দিকে সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মাদক ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে বলে ধারণা পুলিশের।
জামালপুর : বকশীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৮ মামলার এক আসামি নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম শিপন (৩২)। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত ডুমুর তলা নামক স্থানে এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়। এ সময় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি এপাচি মোটরসাইকেল, পাইপগান ও ৩০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।