মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন বিহারির পরিবর্তে আসামি হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কারাগারে থাকা আরমানের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
একইসঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে তাকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি চার পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ এম রাসেল চৌধুরী।
সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ২৬ মামলার ভুল আসামি পাটকল শ্রমিক জাহালম প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর উচ্চ আদালতের নজরে আনার পর মুক্তি পান। একটি জাতীয় দৈনিকে গত ১৮ এপ্রিল এ রকম আরেক জাহালমের ঘটনা প্রকাশিত হয়। মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন বিহারির পরিবর্তে আসামি হিসেবে কারাগারে ‘নির্দোষ’ আরমান।
প্রকাশিত এ প্রতিবেদন যুক্ত করে একটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষে হাইকোর্টে রিটটি করে ‘ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন।
পরে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট মামলার নথি তলব করে রুল জারি করেন। রুলে আরমানকে আটক রাখা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাকে কেন মুক্তি দেওয়া হবে না, তাকে হাইকোর্টে হাজির করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তাকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হয়।
ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, পল্লবীর বেনারসি কারিগর মো. আরমান নির্দোষ হয়েও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে কারাভোগ করছেন। রাজধানীর পল্লবী থানার একটি মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাদক কারবারি শাহাবুদ্দিন বিহারি এ মামলার প্রকৃত আসামি। কিন্তু ওই পরিচয়ে তার পরিবর্তে সাজাভোগ করছেন আরমান।
শুধু বাবার নামে মিল থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে শাহাবুদ্দিন নামে আদালতে সোপর্দ করেছে বলে জোর অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
অন্যদিকে প্রকৃত আসামি শাহাবুদ্দিন কারাগারের বাইরে দিব্যি মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন।