পেনশন বইয়ে যেন ঝামেলার অন্ত ছিল না। নানা নিয়মের কারণে শিকার হতে হতো বিড়ম্বনার। পেনশনভোগীদের এসব ভোগান্তি দূর হচ্ছে। অবসান হচ্ছে পেনশন বইয়ের যুগের। এখন থেকে আর পেনশন বই (পেনশন পেমেন্ট অর্ডার) নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মাসে মাসে ব্যাংকে যেতে হবে না। মাসিক পেনশন ও অন্যান্য ভাতা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা করে দেবে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিজিএ)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাস থেকে ঢাকায় ও সারাদেশে ডিসেম্বর থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেনশন পৌঁছে দেবে হিসাব সিজিএ। গত দুই মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে এটি ঢাকায় চালু হয়েছে।
জানা গেছে, এ ব্যবস্থায় পেনশনারের পাওনা একবারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দিয়ে দেয়া হবে। পরে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে পেনশনারের নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে অবসরগ্রহণকারীদের সিজিএ অফিসের ওয়েবসাইট ও হিসারক্ষণ অফিস থেকে সংগৃহীত একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হবে। এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও নিজের ব্যাংক হিসাবের এমআইসিআর চেক বইয়ের উপরিভাগের ফটোকপি ব্যাংকে জমা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ব্যাংক এসব ডকুমেন্ট ডি-হাফ জমা দেয়ার সময় হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে জমা দেবে।
বর্তমানে সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ও তাদের উত্তরাধিকারীরা রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে অবসর সুবিধা পেয়ে থাকেন। অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীরা যেখান থেকে অবসরে যান বা যেখান থেকে পেনশন তুলতে চান সেই জেলা বা উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে পেনশন বই নেন। ওই এলাকার ব্যাংক শাখাগুলোতে পেনশনারদের তালিকা ও পেনশনের পরিমাণ দিয়ে একটি লিস্ট (যাকে ‘ডি-হাফ’ বলা হয়) দেয় হিসাবরক্ষণ অফিস।
পেনশনভোগী ব্যক্তি হিসাবরক্ষণ অফিসে হাজির হয়ে পেনশনের মূল বইয়ে স্বাক্ষর করে ব্যাংকে হাজির হন। ব্যাংক নিজস্ব তহবিল থেকে টাকা দিয়ে দেয়। পরে সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে কমিশনসহ পুনর্ভরণ নেয়।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ৭ লাখ লোক অবসর সুবিধা গ্রহণ করেন। এ বছর সরকার পেনশন ও গ্রাচ্যুইটি বাবদ বাজেটে ২৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে।