চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃসেশন চার্জ (২৫০ টাকা) পরিশোধ না করায় বিনামূল্যে নতুন বই পায়নি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে, যারা আংশিক টাকা দিয়েছে তাদের আংশিক বই দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন পাল। মোট ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১০ জন শিক্ষার্থীকে নতুন বই দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিভাবকরা শনিবার (৪ জানুয়ারি) প্রতিবাদ জানিয়ে অবস্থান নেন বিদ্যালয় চত্বরে।
তবে ঘটনার পর থেকেই স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছে প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন পাল। অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, তিনি অসুস্থ তাই স্কুলে আসেননি। অন্যদিকে দেখা যায় বিদ্যালয়ের একটি তালাবদ্ধ কক্ষে সরকারি নতুন বই রেখে দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাপলা বলেন, ‘শিক্ষকরা ২৫০ টাকা চাচ্ছিল। আমি ১০০ টাকা দিয়েছিলাম বলে প্রধান শিক্ষক আমাকে অর্ধেক বই দিয়েছেন। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সানিউজ্জামান অন্তু বলেন, ‘নতুন বই নিতে স্কুলে আসলে বলা হয় ২৫০ টাকা না দিলে বই দেওয়া হবে না। পরে আমি বাড়ি গিয়ে টাকা নিয়ে এসে লাইনে দাঁড়াই।’ সে সময় প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘যারা টাকা দেবে না তাদের বই দেওয়া হবে না।’ অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরও একই অভিযোগ।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, টাকা ছাড়া কেন বই দিচ্ছে না এই বিষয়ে জানতে চাইলে চিত্ত রঞ্জন পাল স্যার বলেন, সেশন চার্জ নেওয়া হচ্ছে। এই টাকা ছাড়া বই দেওয়া যাবে না। সহকারী প্রধান শিক্ষক স্যারের কাছে গেলে তিনিও বলেন হেড স্যার বললেই বই দেব।
অভিভাবকরা আরও বলেন, ‘সেশন চার্জ নিতে হলে পরে নেবে। বই উৎসবের দিন কেন টাকা নিতে হবে। আর স্কুলের একটি কক্ষে তো অনেক নতুন বই রয়েছে। তবুও কেন টাকা ছাড়া বই দেওয়া হবে না সন্তানদের। আমরা এর সঠিক বিচার চাই, জড়িতদের শাস্তি চাই।’
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুদ্দিন বলেন, ‘দয়া করে আমার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না। হেড স্যার স্কুলে আসলে আপনারা তার কাছ থেকে সব জেনে নেবেন। আমি কিছু জানি না।
অভিযুক্ত গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন পাল বলেন, ‘আপনারা বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন। বই বিতরণের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। শুধু সেশন চার্জ নেওয়া হয়েছে। পরে যদি শিক্ষার্থীরা টাকা না দেয় এজন্য বই বিতরণের দিন একবারে নেওয়া হচ্ছে। অভিভাবকরা আমার নামে মিথ্যা কথা বলছে। সকলকে বই দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহা জানান, সেশন চার্জ বৈধ আছে, তবে বই উৎসবের দিন টাকা নেওয়ার বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করা হয়েছে। টাকা দিতে না পারায় নতুন বই পায়নি শিক্ষার্থীদের এ অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কথা বলেছি প্রতিটি শিক্ষার্থীই বই পেয়েছে।’