অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সোনার বাংলা গঠনের মজবুত ভিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই তৈরি হয়েছিল। একটি বিধস্ত অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন তিনি। একটি ধ্বংসস্তুপের ছাই থেকে শুরু করেন বঙ্গবন্ধু, তাঁর নেওয়া সেসব যুগান্তকারী পদক্ষেপের সুফল বাংলাদেশের মানুষ ভোগ করে চলেছে। যার ভিত্তিভূমির উপর আজ দাঁড়িয়ে আছে দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতি।
সোমবার বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমাণ ও ভয়াবহতা ছিল অবর্ণনীয়। সেটা অল্প কথায় বলে শেষ করা যাবে না। পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করে পাকিস্তানিরা বাংলাদেশকে এক ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, সারাদেশের মানুষজনের হাতে তখন মাত্র চার কোটি টাকার মতো ছিল। বৈদেশিক মুদ্রার কোনো মজুদ বাংলাদেশ ব্যাংকে ছিল না। মাত্র ১০ হাজারের মতো নথি দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয়।
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, আগস্ট বাঙালীর জীবনে শোকাহত ও অভিশপ্ত মাস। বেদনা আর শোকের দুর্বিষহ স্মৃতির মাস। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, সুবেহ সাদিকের সময় যখন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিজ বাসভবনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে বুলেটের বৃষ্টিতে ঘাতকরা ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল, তখন ভেজা বাতাস কেঁদেছে সমগ্র বাংলা।
তিনি বলেন, ঘাতকদের অস্ত্রের সামনে ভীতসন্তস্ত্র বাংলাদেশ বিহ্বল হয়ে পড়েছিল শোকে আর অভাবিত ঘটনার আকস্মিকতায়। কাল থেকে কালান্তরে জ্বলবে এ শোকের আগুন। বিশাল হৃদয়ের যে মানুষটিকে কারাগারে বন্দী রেখেও পাকিস্তানী হানাদাররা স্পর্শ করার সাহস দেখাতে পারেনি, অথচ স্বাধীন বাংলার মাটিতে নির্মমভাবে সপরিবারে তাঁকে জীবন দিতে হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে গোটা জাতি।
অনুষ্ঠানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, ১৫ আগস্টের জঘন্যতম হত্যাকান্ড, যার নজির ইতিহাসে বিরল। ওই কালরাতে শিশু অন্তঃসত্ত্বা নারীকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, পাশাপাশি তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে আর্থিক খাতগুলোর জন্য মহা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে আর্থিক খাতের প্রতিটি সেক্টরে যে কর্মযজ্ঞ শুরু করেন তিনি, তা অকল্পনীয়।
অনুষ্ঠানে ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়।