চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃইতিহাস গড়ার হাতছানি নিয়ে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। টাইগারদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৫৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৫.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নিয়েছে ভারত। ৮ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরলো টিম ইন্ডিয়া। আগামী ১০ নভেম্বর নাগপুরে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি দুই দলের জন্য সিরিজ জেতার লড়াই হয়ে থাকল।
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে লিড নেয় মাহমুদউল্লাহর দলটি। তবে, দ্বিতীয় ম্যাচে বোলিংয়ের ব্যর্থতায় বড় ব্যবধানে হারতে হলো সফরকারীদের। এর আগে সফরের প্রথম সিরিজ তথা টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিকদের ৭ উইকেটে হারান মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে যা বাংলাদেশের প্রথম জয়। শেষ ম্যাচে জিতলে ইতিহাসটা আরও সমৃদ্ধ হবে। অর্থাৎ প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে, তাও আবার তাদেরই মাঠে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাজকোটে চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। এ ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামে দু’দল। দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। যেখানে শুরুটা ভালো করলেও পরবর্তীতে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে উদ্বোধনী জুটিতে নামা লিটন দাশ ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ নেমে লাল-সবুজদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। ৭.২ ওভারে ৬০ রান তোলেন তারা। এর আগে ষষ্ঠ ওভারে যুজবেন্দ্র চাহালের ঘূর্ণিতে স্টাম্পিং হয়েও বেঁচে যান লিটন। ভারতীয় উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্ত স্টাম্প থেকে এগিয়ে এসে বল ধরেন।
তবে অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লিটন দাশ। ২১ বলে ৪টি চারে ২৯ করার পর ঋষভ পন্ত তাকে রান আউট করেন। ১১তম ওভারে দারুণ খেলা মোহাম্মদ নাঈম শেখ ফেরেন। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তিনি শ্রেয়াস আইয়ারকে ক্যাচ দেন। ৩১ বলে ৫টি চারে ৩৬ করেন এই বাঁহাতি।
প্রথম ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম এদিন সুবিধে করতে পারেননি। ১৩তম ওভারে ওভারের প্রথম বলে যুজবেন্দ্র চাহালকে তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৪ রানে আউট হন। পরে একই ওভারের ষষ্ঠ বলে স্টাম্পিং হন দারুণ খেলতে থাকা সৌম্য সরকার। ২০ বলে ২টি চার ও এক ছক্কায় ৩০ করেন তিনি।
১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে বিদায় নেন আফিফ হোসেন। খলিল আহমেদের বলে উড়িয়ে মেরে রোহিত শর্মার ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ধীর ব্যাটিংয়ে ৮ বলে ৬ রান করেন তিনি। ঝড়ো ব্যাটিং করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাজে এক শট খেলে আউট হন। ১৯তম ওভারে দীপক চাহারের স্লো বাউন্সারে পেছনে মারতে গিয়ে শিভাব দুবের ক্যাচে মাঠ ছাড়েন। ২১ বলে ৪টি চারে ৩০ করেন এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। মোসাদ্দেক হোসেন ৭ ও আমিনুল ইসলাম ৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে যুজবেন্দ্র চাহাল সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন। এছাড়া দীপক চাহার, খলিল আহমেদ ও ওয়াশিংটন সুন্দর একটি করে উইকেট ভাগ করে নেন।
১৫৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার শিখর ধাওয়ান ম্যাচের ১১তম ওভারে আমিনুল ইসলামের ঘূর্ণি মিস করে বোল্ড হন। তার আগে ২৭ বলে চারটি চারের সাহায্যে করেন ৩১ রান। দলীয় ১১৮ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ভারত।
পাকিস্তানের শোয়েব মালিকের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নেমে ২৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন রোহিত শর্মা। ১৩তম ওভারে আমিনুলের দ্বিতীয় শিকারে ফেরেন ভারতীয় এই দলপতি। তার আগে ৪৩ বলে ৬টি চার আর ৬টি ছক্কায় করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৫ রান। দলীয় ১২৫ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় ভারত। শ্রেয়াস আইয়ার ২৪ এবং লোকেশ রাহুল ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের একাদশ: লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, আফিফ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, আল আমিন হোসেন, আমিনুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম।
ভারতের একাদশ: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, ঋশভ পন্ত, শিভাম দুবে, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ওয়াশিংটন সুন্দর, যুজবেন্দ্র চাহাল, দীপক চাহার, খলিল আহমেদ।