দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। তারা দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চায়।এছাড়া স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন ৭৬ শতাংশ অভিভাবক।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘এডুকেশন ওয়াচ ২০২০-২১ সমীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন’ থেকে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ৭৫% শিক্ষার্থী, ৭৬% অভিভাবক ও ৭৩% জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে ৫৮% শিক্ষক এবং ৫২% উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সতর্কতার সঙ্গে স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে তাদের মতামত দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে স্কুল খুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। প্রথমে করোনার সংক্রমণ নেই বা একেবারে কম- এমন গ্রামীণ এলাকার স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরপর মার্চ থেকে বড় বড় শহরের স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় এই ছুটি বর্ধিত করা হয়। যা আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি চলবে।
মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার এই তথ্য তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের আট বিভাগ থেকে আট জেলার ২১টি উপজেলায় এ জরিপ কার্যক্রম চালিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ডিসেম্বরের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে মোট দুই হাজার ৯৯২ জনের কাছে তথ্য নেওয়া হয়। এরমধ্যে এক হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী, ৫৭৮ জন শিক্ষক, ৫৭৬ জন অভিভাবক, ৪৮ জন উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক কর্মকর্তা, ১৬ জন জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক কর্মকর্তা মতামত দেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি এবং মাধ্যমিক অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জরিপে অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৬২ শতাংশের বেশি শিক্ষক মনে করেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন এবং বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।
আরও বক্তব্য দেন ব্র্যাকের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও এডুকেশন ওয়াচের প্রধান গবেষক মনজুর আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ শাহাদৎ হোসেন, এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, এডুকেশন ওয়াচের সদস্য ও প্রবীণ শিক্ষকনেতা কাজী ফারুক আহমেদ, এডুকেশন ওয়াচের সদস্য মোহাম্মদ মোহসীন প্রমুখ।